চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে খাদ্যগুদামে ভিজিএফের নিম্নমানের চাল ক্রয় ও তা পরবর্তী সময়ে ভালো চালের সঙ্গে যোগ করে ভোক্তাদের মাঝে সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার সকালে একইভাবে ভালো চালের সঙ্গে নিম্নমানের চাল ভেজাল করা হচ্ছে সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ আসে। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলার খাদ্যগুদামে সরেজমিন গেলে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, জীবননগর উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কাওসার হোসেন ও অফিস সহকারী রাকিব হোসেন যোগদানের পর থেকে নানা কৌশলে নাইটগার্ড মাসুদ আলম এবং ফুড গোডাউন শ্রমিক সর্দার রমজান আলীর মাধ্যমে দুর্নীতি-অনিয়ম চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মিলারদের অভিযোগ খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাকে প্রতি কেজি ভালো চালের অনুকূলে এক টাকা এবং নিম্নমানের খাওয়ার অনুপযোগী চালের অনুকূলে ৬-৭ টাকা হারে উৎকোচ না দিলে তিনি চাল নিতে চান না। এসব নিম্নমানের চাল খাদ্যগুদাম থেকে সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচিতে সরবরাহ করা হয়।
অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, নিম্নমানের চাল ক্রয়ের পর তা অফিস টাইমের আগে ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত গুদামের শ্রমিক সর্দার রমজানের নেতৃত্বে খাদ্যগুদামের ভেতর থেকে তালাবদ্ধ করে ভেতরে সব শ্রমিকরা নিম্নমানের (স্থানীয় ভাষায় তামড়ী চাল অর্থাৎ লাল রঙের চাল) চালের সঙ্গে ভালো চাল মিশিয়ে থাকে।
একইভাবে সোমবার সকালে নিম্ন মানের চাউলের সাথে ভাল চাউল ভেজাল কালে বিষয়টি সাংবাদিকদের চোখে পড়ে। ভিতরে কি হচ্ছে জানতে চাইলে খাদ্য গুদাম কর্মকতা কাওসার হোসেন বলেন, ভিজিএফের চাল তৈরী করা হচ্ছে।
উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা কাওসার হোসেন বলেন, ভাল চালের সাথে নিন্মমানের চাল মেশানোর অভিযোগ সত্য নয়। ভিজিডির চাল সরবরাহের জন্য চাল গড় করে রিপ্যাক করা হচ্ছিল।
তবে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ওই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। আর এই সুযোগে ভেজাল চাল মেশানোর কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা দ্রুত গোডাউনে ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শহিদুল হক বলেন, নিম্নমানের চাল ক্রয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ভিজিডির চাল সরবরাহের জন্য যদি ৩০ কেজির প্যাকেট না থাকে তা হলে রিপ্যাক করা যাবে। শ্রমিকরা যদি সঠিক কাজ করেন তা হলে তারা গুদাম ছেড়ে পালাবে কেন?
এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে টনক নড়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। মঙ্গলবার বিকালে তড়িত পরিদর্শনে আসেন খুলনা বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মাহাবুবুর রহমান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ভালো চালের সঙ্গে খারাপ চাল মেশানোর কোনো সুযোগ নেই। আমি তদন্ত করে দেখছি। কোনো অনিয়ম পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো জানান, অতিদ্রুত এই খাদ্যগুদামের সবাইকে বদলি করা হবে।
(আহৃত)