সরকারের অঙ্গীকার ছিল, দেশে কর্মক্ষম বিশাল জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করতে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে আধুনিক টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (টিএসসি) গড়ে তোলা হবে। সেই উদ্দেশ্যে ২০১৪ সালে নেওয়া হয়েছিল ‘এক উপজেলায় এক টিএসসি’ নামের একটি বৃহৎ প্রকল্প। মাত্র আড়াই বছরে কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রকল্প শুরু হয়ে বর্তমানে ১২ বছর পেরোলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। অথচ এর মধ্যেই প্রকল্প ব্যয় আড়াই গুণের বেশি বেড়ে গেছে, সময় বাড়ানো হয়েছে ছয়বার।
সর্বশেষ প্রকল্প বাস্তবায়নে আরো দেড় বছর সময় ও অতিরিক্ত এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা চেয়েছে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ। বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা, পরিকল্পনায় দুর্বলতা আর ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার ফলেই এই পরিস্থিতিতে অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট মহলের বিরুদ্ধেই।
২০১৪ সালে সরকার ঘোষণা দিয়েছিল, দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (টিএসসি) গড়ে তোলা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে ১০০টি উপজেলায় একযোগে নির্মাণকাজ শুরু হয়, যার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের মধ্যেই।
কিন্তু বাস্তবে ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো ৩০ শতাংশ কাজ অসম্পূর্ণ। ব্যয় বেড়েছে তিন গুণের বেশি, সময় বাড়ানো হয়েছে ছয়বার, আর প্রকল্পের জাতীয় লক্ষ্য—দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার স্বপ্ন, তা-ও এখনো ঝুলে আছে।
প্রকল্পটির নাম ‘একটি উপজেলায় একটি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন (প্রথম পর্যায়)’। বাস্তবায়ন করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ (টিএমইডি)।
২০১৪ সালের জানুয়ারিতে একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯২৪ কোটি টাকা। উদ্দেশ্য ছিল কারিগরি শিক্ষাকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিয়ে প্রতিবছর এক লাখের বেশি দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা।
প্রকল্পের ডিপিপি অনুযায়ী, ২০১৬ সালের জুনের মধ্যেই ১০০টি উপজেলায় টিএসসি প্রতিষ্ঠা, অবকাঠামো নির্মাণ, যন্ত্রপাতি সরবরাহ, শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ২০২৫ সালের মাঝামাঝি এসেও কাজ শেষ হয়নি। প্রকল্পটির অগ্রগতি এখন পর্যন্ত ৭০ শতাংশের বেশি নয় বলে নিশ্চিত করেছে পরিকল্পনা কমিশন।