সুজাউজ্জামান জুয়েলঃ
হঠাৎ করেই কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে কুমার নদের তীরবর্তী বসত বাড়ীর কয়েকটি ঘর, গাছপালা চলে গেছে নদীগর্ভে। আশে পাশের কয়েকশ মিটার এলাকাজুড়ে ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে তীরের শতশত মানুষ। এছাড়া ভাঙ্গনের হুমকির মুখে রয়েছে ২০/২৫টি বসত বাড়ী, সরকারী রাস্তা, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি ব্রীজ। হঠাৎ করে ভাঙ্গন সৃষ্ঠি হওয়া দিশেহারা হয়ে পরেছে ওই এলাকার মানুষ। কেউ কেউ ব্যক্তিগত অর্থে ধ্বস ও ভাঙ্গন ঠেকাতে বালুর বস্তা, বাঁশ ও গাছের বল্লি দিয়ে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা চালালেও তাতে কোন কাজ হ”েছনা। এমন ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুর পৌরসভার কুমার নদের গুহলক্ষীপুর এলাকায়।
¯’ানীয়রা জানান, গত কয়েকদিনের প্রচন্ড বৃষ্টির এবং ফরিদপুর শহর রক্ষা করার সুইচ গেট দুটি খুলে দেওয়ার কারনে প্রথমে নদপাড়ের বিশাল একটি অংশজুড়ে ফাঁটলের সৃষ্টি হয়। এর পর হঠাৎ করেই প্রায় একশ মিটার এলাকা নদের গর্ভে ধ্বসে পড়ে। এতে করে ওই এলাকার কয়েকশ মানুষ সারা রাত আতংকের মধ্যে থাকে। ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাতের বেলায়। এরপরই গত কয়েকদিন ধরে একের পর এক নদপাড়ের বেশ কয়েকটি বসত বাড়ী ধ্বসে পড়ে। এ ঘটনায় গুহলক্ষীপুর ও ভাটিলক্ষীপুর এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এরমধ্যে নদের দুপাশের কয়েকশ মিটার এলাকার ২০/২৫টি ¯’ানে তীব্র ফাঁটলের সৃষ্টি হয়েছে। গুহলক্ষীপুর এলাকার চুনাঘাটা ব্রীজ সংলগ্ন যেসব বাড়ী ঘর রয়েছে তার মধ্যে মতিয়ার প্রামানিকের বাড়ীর বড় একটি অংশ কুমার নদে ধ্বসে গেছে। এতে তার কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভয়াবহ হুমকির মুখে রয়েছে তার পুরো বাড়ীটি। যে কোন সময়ে নদের গর্ভে বিলিন হয়ে যেতে তার বসতবাড়ী।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মতিয়ার প্রামানিকের বাড়ীটি রক্ষা করতে তিনি নিজ উদ্যোগে প্রায় ৭০/৮০ হাজার টাকা গাছের বল্লি, বাঁশ, খুঁটি, বালুর বস্তা দিয়ে নিজের ভিটা রক্ষার প্রানপন চেষ্টা চালিয়ে যা”েছন। তবে শত চেষ্ঠাও করে তার বাড়ী-ঘর রক্ষা করতে ব্যর্থ হ”েছন তিনি।
একই সাথে হাজী মোঃ মোফাজ্জেল, আলেয়া বেগম,বিল্লাল প্রামানিক, মঞ্জু ফকির, জাহিদ মোল্লাসহ বেশ কিছু বসতবাড়ী পড়েছে হুমকির মুখে। হুমকির মুখে রয়েছে একটি ব্রীজ, সরকারী রাস্তা, মসজিদসহ বেশকিছু ¯’াপনা।
¯’ানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গত বছর কুমার নদ সংস্কার করাকালীন সময়ে নদের পাড় বাঁধানোর কথা থাকলেও ঠিকাদার সেই কাজ না করে নদী থেকে মাটি কেটে নেবার কারনেই আজ এ অব¯’া। নদের হাত থেকে বসতবাড়ী, বিভিন্ন ¯’াপনা ধ্বসে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করতে দ্রæত সরকারী ভাবে কাজ করা জরুরী হয়ে পড়েছে। দ্রæত কাজ শুরু করা না হলে পৌরসভার গুহলক্ষীপুর ও ভাটিলক্ষীপুর এলাকার কয়েকশ মানুষ বসতবাড়ী হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়বেন।
কুমার নদের ভাঙ্গনের বিষয়ে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাকিব হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পর সেখানে সরেজমিন লোক পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যব¯’া গ্রহনের নির্দেশ দেয়্ াহয়েছে। পরবর্তীতে পরীক্ষ-নিরিক্ষা করে বরাদ্ধ পেলে বড় আকারে কাজ করা হবে।