বাংলার আকাশ ডেস্ক:
নির্ধারিত সময় ও ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না দেশের গুরুত্বপূর্ণ ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প। দায়িত্বপ্রাপ্তদের গাফিলতি, নকশায় ত্রুটি, সঠিকভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই না হওয়া, পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়া এবং যথাসময়ে অর্থ না পাওয়ার কারণেই মূলত এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া কোনো প্রকল্পই নির্ধারিত মেয়াদে শেষ হয়নি। ফলে বাস্তবায়নের মেয়াদ কমপক্ষে আড়াই বছর এবং সর্বোচ্চ ৯ বছর বাড়তি সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। চিহ্নিত সমস্যাগুলো জরুরি ভিত্তিতে দূর করা না হলে বর্ধিত মেয়াদের মধ্যেও কয়েকটির বাস্তবায়ন শেষ নাও হতে পারে, সেক্ষেত্রে আবার বেড়ে যেতে পারে প্রকল্প ব্যয়–এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
১০ প্রকল্প নির্ধারিত সময় ও ব্যয়ে শেষ হয়নি, সেগুলো হচ্ছে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ, সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রজেক্ট, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ এবং দোহাজারী–রামু–গুনদুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ। আরও আছে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), খুলনা–মোংলা রেলপথ নির্মাণ, সিরাজগঞ্জ শিল্পপার্ক স্থাপন, চিটাগাং সিটি আউটার রিংরোড নির্মাণ এবং খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প।
প্রকল্পগুলোর মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৬৩ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা। এই মুহূর্তে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা।
এছাড়া উল্লিখিত প্রকল্পগুলোর মেয়াদ বৃদ্ধির চিত্র হচ্ছে–পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল অনুমোদিত মেয়াদ ছিল ৮ বছর, বর্তমানে প্রকল্পটি শেষ হতে সময় লাগছে ১৪ বছর। ফলে বাড়তি সময় যাচ্ছে ৬ বছর। এছাড়া কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পটি সাড়ে ৪ বছরের স্থলে ৮ বছর এবং অতিরিক্ত সময় সাড়ে ৩ বছর।
পাঁচ বছর মেয়াদি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সাড়ে ১২ বছর, অতিরিক্ত সময় সাড়ে ৭ বছর। পাঁচ বছর মেয়াদি পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পটি লাগছে ৮ বছর, বাড়তি সময় আড়াই বছর। সাড়ে ৩ বছরের দোহাজারী–রামু–গুনদুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি লাগছে ১২ বছর, অতিরিক্ত সময় যাচ্ছে সাড়ে ৮ বছর।
চার বছর মেয়াদি বিআরটি প্রকল্পটি লাগছে ১১ বছর, বাড়তি সময় ৭ বছর। এছাড়া খুলনা–মোংলা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি ৩ বছরের মেয়াদ ছিল। এখন যাবে ১২ বছর। ফলে অতিরিক্ত লাগবে ৯ বছর। সিরাজগঞ্জ শিল্পপার্ক স্থাপন প্রকল্পটি ৪ বছরে বাস্তবায়নের মেয়াদ ছিল। এখন যাচ্ছে সাড়ে ১২ বছর।
ফলে অতিরিক্ত সময় চলে যাচ্ছে সাড়ে ৮ বছর। চিটাগাং সিটি আউটার রিংরোড প্রকল্পটি ৩ বছরের মেয়াদ ছিল। বর্তমানে লাগছে ১১ বছর। অতিরিক্ত সময় চলে যাচ্ছে ৮ বছর। এছাড়া খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পটি ২ বছরে বাস্তবায়নের কথা ছিল। এখন যাচ্ছে ৯ বছর। ফলে এ প্রকল্পটিতে অতিরিক্ত সময় চলে যাচ্ছে ৭ বছর।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাস্তবায়ন দেরি হলে ব্যয় তো কিছুটা বাড়বেই। কিন্তু এসব প্রকল্পে ব্যয়বৃদ্ধির যুক্তিসংগত কারণও রয়েছে। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অবশ্যই বাড়তি এ খরচ জনগণের টাকার অপচয়। কেননা নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পগুলো শেষ হলে হয়তো এত অতিরিক্ত ব্যয় করতে হতো না।
(আহৃত)