বাংলার আকাশ ডেস্কঃ
ফরিদপুরে বিএডিসির বৃহত্তর ফরিদপুরের খাল খনন ও সেচ প্রকল্পের (৪র্থ পর্যায়) আওতায় কেনা নিন্মমানের পাইপ নিয়ে তোলপাড় চলছে। কোনপ্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই গোপনে কেনা হয়েছে নিন্মানের প্রায় ৫ কোটি টাকার পাইপ এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিএডিসির অভ্যন্তরে থাকা এ পাইপ গুলোর বেশকিছু ইতোমধ্যে ফেটে গেছে। নিন্মমানের পাইপ কেনার ঘটনাটি জানাজানি হবার পর স্থানীয় ঠিকাদার ও সুফলভোগীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় সেচং প্রকল্পের আওতায় টেন্ডারের মাধ্যমে পাইপ কিনে থাকে বিএডিসি। এবছরে গত একমাস আগে কোনপ্রকার টেন্ডার ছাড়াই ৫ কোটি টাকার পাইপ কেনা হয়। ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে এসব পাইপ কেনার কথা থাকলেও বর্তমান প্রকল্প পরিচালক দুটি কোম্পানীর সাথে আঁতাত করে নিন্মমানের পাইপ কেনেন। বেঙ্গল ও পিসিএল কোম্পানীর এ পাইপ গুলো অত্যান্ত নিন্মমানের বলে অভিযোগ উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে কেনা পাইপ গুলো বিএডিসি অফিস অভ্যন্তরে খোলা আকাশের নীচে রাখা হয়েছে। এসব পাইপের মধ্যে বেশকিছু পাইপ ফেটে যায়। বিষয়টি অফিসের কতিপয় ব্যক্তি ও স্থানীয়দের নজরে এলে তোলপাড় শুরু হয়। বিষয়টি যাতে আর কারো নজরে না আসে সেজন্য প্রকল্প পরিচালক ফাটা ও নষ্ট পাইপ গুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলেন। বিএডিসির একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে বিএডিসিতে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে।
যে যেভাবে পারছে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের অভিযোগ, বিএডিসির প্রকল্প পরিচালক বিভিন্ন কাজে ১২% নিয়ে থাকেন। তাছাড়া তার নিদিষ্ট ঠিকাদার ছাড়া তিনি কাউকে কাজ দেন না। ফরিদপুরে বিএডিসির ১২৮জন তালিকাভুক্ত ঠিকাদার থাকলেও তাদের কাজ না দিয়ে বিভিন্ন জেলার ঠিকাদারকে অর্থের বিনিময়ে কাজ দিয়ে থাকেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন নামে-বেনামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজ নিজেই করেন। ঠিকাদারেরা অভিযোগ করে বলেন, কোটেশনের মাধ্যমে যে টেন্ডার আহবান করা হয় তার কোন কাজই হয়না। বছরে এমনি ভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বিএডিসির প্রায় ১০০ কোটি টাকার টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর টেন্ডার জমাদানের শেষ তারিখ ছিল। ঠিকাদারদের অভিযোগ, নানা বাহানায় স্থানীয় ঠিকাদারদের লাইসেন্সের ক্রুটি দেখিয়ে অন্য জেলার ঠিকাদারদের কাজ দিতে অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে। ঠিকাদারদের অভিযোগ, ঝিনেদার মেসার্স নিশিত বসু নামে যে ঠিকাদার বিএডিসির কাজ নেন তার বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। মেসার্স লিবার্টি ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্টানেরও কোন কাগজপত্র নেই। মূলত প্রকল্প পরিচালক এসব বেনামী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়ে নিজের লোকদের দিয়ে করিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এসব বিষয় নিয়ে ঠিকাদারদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্প পরিচালকের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে স্থানীয়রা ঠিকাদারেরা গত ৮ সেপ্টেম্বর পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহানের কাছে অভিযোগ তুলে ধরেন। এছাড়া বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন ঠিকাদারেরা।
এ বিষয়ে নিয়ে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী পঙ্কজ কর্মকারের সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।