টাঙ্গাইলের বাসাইলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের একটি সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
প্রকল্পটিতে মোটা অঙ্কের ঘুসগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে। বাসাইল ইউপি অফিস-নয়াপাড়া সড়ক ভায়া জয়নাল মাস্টারের বাড়ি উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সড়কটি নির্মাণ করছে মেসার্স দুয়েল এন্টারপ্রাইজ।
অভিযোগ রয়েছে, সড়কটি নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম হলেও উপজেলা প্রকৌশলী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুস নিয়ে অনিয়মের বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করে আছেন। প্রকল্পটির প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ না করেই ইতোমধ্যে ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকা তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিন দেখা যায়, বাসাইল পৌরসভা ভবনের ঠিক উত্তর পাশ থেকে সড়কটির কাজ শুরু হয়েছে। সড়কে মানহীন ইটের খোয়া দিয়ে সড়ক নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে একযুগ পূর্বে বন্ধ হওয়া একটি ইটের ভাটা থেকে পরিত্যক্ত ইটের খোয়া দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ইটের খোয়া দেখে মনে হয় পোড়ামাটি। হাতে নিয়ে চাপ দিতেই ভেঙে যাচ্ছে পোড়া মাটির ইটের খোয়া।
প্যানাসাইডিংয়ের নিম্নমানের কাজ করায় ইতোমধ্যে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় মাটি ধসে গেছে। সাব-বেজের কাজ শেষ হলেও সেখানেও নানা অনিয়ম হয়েছে। ১০ ইঞ্চি সাব-বেজের বদলে দেওয়া হয়েছে ৪ থেকে ৬ ইঞ্চি। এসব অনিয়মের ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় সাংবাদিকের প্রাণনাশের হুমকি দেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আব্দুল মতিন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক বলেন, যিনি সড়কটি নির্মাণ করছেন তিনি প্রকৌশলীর বন্ধু। এ জন্য যে কোনো প্রকার অনিয়ম করেও পার পেয়ে যাচ্ছে ঠিকাদার। ঠিকাদার প্রভাবশালী ও খারাপ প্রকৃতির লোক হওয়ায় শত অনিয়ম হলেও স্থানীয় কেউ মুখ খুলতেও পারে না। শত অনিয়ম হলেও উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে কেউ দেখতে আসেনি।
এ বিষয়ে দুয়েল এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর মাহফুজুর রহমান আখন বলেন, কাজটি আমার প্রতিষ্ঠানের এক সহযোগী স্থানীয় মতিন নামে একজন বাস্তবায়ন করছেন। এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিনামাও আমাদের মধ্যে হয়েছে। তবে যতদুর জানি তিনি স্থানীয় প্রকৌশলীকে ম্যানেজ করেই সব কাজ করছেন। প্রকৌশলী আব্দুল জলিলকে মোটা অঙ্কের টাকা না দিয়ে কোনো ঠিকাদারই বাসাইল উপজেলায় কাজ করতে পারে না বলেও তিনি জানান।
বাসাইল উপজেলার প্রকৌশলী আব্দুল জলিল ঠিকাদারদের কাজ থেকে ঘুসগ্রহণের কথা অস্বীকার করে বলেন, বাসাইল ইউপি অফিস-নয়াপাড়া সড়ক ভায়া জয়নাল মাস্টারের বাড়ি উন্নয়ন প্রকল্পটিতে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। কিছু নিম্নমানের ইটের খোয়া রাস্তার পাশে রাখা হয়েছিল। সেগুলো সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
(আহৃত)