ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিস্যেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা করতে তেহরানে গেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেখানে গিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি।
পুতিনকে বহনকারী বিমানটি মঙ্গলবার ইরানের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় রাজধানী তেহরানে অবতরণ করে। এদিন রাতেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পুতিন।
এসময় খামেনি মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোকে ‘বিপজ্জনক’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, এই জোট নিজের জন্য কোনো সীমারেখা মানে না এবং তাকে ইউক্রেনে আটকে দিয়ে উচিত কাজ করা হয়েছে; এটি করা না হলে ন্যাটো ক্রিমিয়াকে উপজীব্য করে যুদ্ধ শুরু করে দিত।
পুতিনকে খামেনি আরও বলেন, যদিও ইউক্রেনের ক্ষেত্রে আপনি যদি আগে পদক্ষেপ না নিতেন তাহলে প্রতিপক্ষই যুদ্ধ শুরু করে দিত।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সাক্ষাতে রুশ প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলেন, কেউ যুদ্ধ চায় না বিশেষ করে যুদ্ধে সাধারণ মানুষের প্রাণহানী একটি শোকাবহ ব্যাপার।
তিনি বলেন, কিন্তু পশ্চিমাদের আগ্রাসী আচরণের কারণে আমাদের সামনে প্রতিক্রিয়া দেখানো ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না।
প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ইউক্রেন সংঘাতের মূল কারণ দেশটিতে পশ্চিমাদের আগ্রাসী তৎপরতা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র কয়েক বছর আগে ইউক্রেনে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে একটি পাশ্চাত্যপন্থী সরকারকে ক্ষমতায় এনে আজকের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে সংঘাতের আরেকটি কারণ হিসেবে পুতিন পূর্বদিকে ন্যাটো জোটের বিস্তারকে দায়ী করেন।
এসময় খামেনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো নিঃসন্দেহে একটি শক্তিশালী ও স্বাধীনচেতা রাশিয়াকে দেখতে চায় না।
তিনি বলেন, আমেরিকা ও পাশ্চাত্য আগের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং তারা বিপুল অর্থ খরচ করেও সিরিয়া, ইরাক, লেবানন ও ফিলিস্তিনে তেমন কিছুই করতে পারছে না।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, পশ্চিমাদের ধোঁকাবাজির মোকাবিলায় ইরান ও রাশিয়াকে সতর্ক থাকতে হবে।
তেহরান ও মস্কোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে দু’দেশের জন্য লাভজনক আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, দু’টি দেশই যখন পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার শিকার তখন তারা দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে পারবে।
আয়াতুল্লাহ খামেনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মার্কিন ডলার বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত সমর্থন করে বলেন, আন্তর্জাতিক লেনদেন থেকে ক্রমান্বয়ে ডলারকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
(আহৃত)