ফরিদপুরে বিরাজ করছে প্রখর দাবদাহ। প্রচণ্ড গরমে কষ্ট পাচ্ছেন সব বয়সী মানুষ। তবে গরমের কারণে আবহাওয়াজনিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে শিশুদের অসুস্থতার হার কয়েকগুণ বেড়েছে।
শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেলে ফরিদপুরের ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, অসুস্থ শিশুদের নিয়ে চিকিৎসার জন্য অভিভাবকরা ভিড় করছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শিশু হাসপাতালের আউটডোরে গত এক সপ্তাহে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে চিকিৎসা নিতে আসা অসুস্থ শিশুর সংখ্যা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তাদের অধিকাংশই ঠান্ডা, জ্বর, ডায়রিয়া, হাত-পায়ে চুলকানিজনিত নানা সমস্যা নিয়ে এসেছে।
বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈরের মোহনপুর থেকে ১০ মাস বয়সী এক শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনে গরমে বাচ্চার গায়ে ফোসকার মতো পড়ে গেছে। এজন্য ডাক্তার দেখাতে এনেছেন।
আরেক শিশুর মা জবেদা খাতুন তিনি এসেছেন সালথা থেকে। তিনি বলেন, আমার বাচ্চার গায়ে লালচে ঘামাচির মতো উঠেছে। প্রচন্ড গরমে বড় মানুষের অবস্থাই খারাপ। শিশুদের অবস্থা বেশি খারাপ। পুরো হাসপাতালেই অনেক ভিড়।মধুখালী থেকে আসা গুলজার হোসেন বলেন, আমার ছোট বাচ্চাটার ঠান্ডা-জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা। আমার মতো আরো অনেকেই এসেছে।
শহরের পুলিশ লাইন এলাকার সাবিয়া বেগম বলেন, আমার দেড় বছরের শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। তার প্রচণ্ড ঠান্ডা জ্বর। এখন ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে যাচ্ছি।
শহর ছাড়াও আশপাশের এলাকা থেকে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে প্রতি মুহূর্তেই ভিড় করছেন হাসপাতালে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহ থেকে গরমে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আগে যেখানে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াইশো শিশু চিকিৎসা নিতো সেখানে এখন চারশ’ থেকে সাড়ে পাঁচশ’ শিশু অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে।
এ ব্যপারে শিশু হাসাপতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মৃত্যুঞ্জয় সাহা বলেন, গরমের তীব্রতা বেড়েছে। ফলে প্রতিদিনই প্রায় চারশ’ থেকে পাঁচশ’ শিশু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে।
তিনি বলেন, এই গরমে শিশুরা যেন ঘরের বাইরে বেশি সময় না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঘুমের সময় তারা যেন ঘেমে ভিজে না থাকে সেদিকে নজর রাখতে হবে। বেশি ঠান্ডা না তবে পরিমিত ঠান্ডা খাবার দিতে হবে। শরীরে পানি ও লবণের সংকট হলে স্যালাইন খাওয়াতে হবে। তাদের খাবারের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। বেশি সমস্যা মনে হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
(আহৃত)