আগামী ১৯ জুন শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আগামীর ১৯ জুন থেকে এসএসসি জেনারেল, এসএসসি ভোকেশনাল এবং দাখিল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানানো হবে।
এ বছর এসএসসিতে তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে না শিক্ষার্থীদের। এসএসসিতে বিভাগভেদে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, কৃষিশিক্ষা, সংগীত, আরবি, সংস্কৃত, পালি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া, চারু ও কারুকলা, পদার্থবিজ্ঞান, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং, রসায়ন, পৌরনীতি ও নাগরিকতা, ব্যবসায় উদ্যোগ, ভূগোল ও পরিবেশ, উচ্চতর গণিত, হিসাববিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, অর্থনীতি বিষয়ে পরীক্ষা হবে।
বাংলা (আবশ্যিক) প্রথমপত্র ও সহজ বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ১৯ জুন। এছাড়াও বাংলা (আবশ্যিক) দ্বিতীয়পত্র ও সহজ বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল ২০ জুন, ইংরেজি (আবশ্যিক) প্রথমপত্র ২২ জুন ও ইংরেজি (আবশ্যিক) দ্বিতীয়পত্র ২৫ জুন, গণিত (আবশ্যিক) পরীক্ষা ২৭ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
গার্হস্থ্য বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়), কৃষিশিক্ষা (তত্ত্বীয়), সংগীত (তত্ত্বীয়), আরবি, সংস্কৃত, পালি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া (তত্ত্বীয়) এবং চারু ও কারুকলা (তত্ত্বীয়) ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে বলে এর আগে জানানো হয়েছিল।
পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়), বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং ৩০ জুন, রসায়ন (তত্ত্বীয়), পৌরনীতি ও নাগরিকতা এবং ব্যবসায় উদ্যোগ আগামী ২ জুলাই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
এছাড়াও, ভূগোল ও পরিবেশ ৩ জুলাই, উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) ৪ জুলাই, হিসাববিজ্ঞান ৫ জুলাই, জীববিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) এবং অর্থনীতি পরীক্ষা ৬ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়। তবে বন্যার কারণে সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসএসসি-সমমান পরীক্ষা শুরু করা হবে বলে জানা গেছে। তবে আপাতত সব পরীক্ষা স্থগিত থাকবে।
এ বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে। গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ২ লাখ ২১ হাজার ৩৮৬ জন।
গত ১২ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, এ বছর সাধারণ নয়টি বোর্ডের অধীনে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডের আওতায় মোট পরীক্ষার্থী ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৯৯৮ জন।
এছাড়া রাজশাহী বোর্ডে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬০০ জন, কুমিল্লায় ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭১৪ জন, যশোরে ১ লাখ ৭০ হাজর ৩৭৭ জন, চট্টগ্রামে ১ লাখ ৪৯ ৭১০ জন, বরিশালে ৯৫ হাজার ৯৭৬ জন, সিলেটে ১ লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ জন, দিনাজপুরে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৯৬১ জন এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৪৮ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।
অন্যদিকে, মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৯ হাজার ৯৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেবে। মোট ৭১৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৫ জন। আর কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মোট ২ হাজার ৮১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ জন পরীক্ষার্থী দেশের ৮২৮ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেবে।
দীপু মনি জানান, ২০২১ সালের তুলনায় চলতি বছর মোট পরীক্ষার্থী কমেছে ২ লাখ ২১ হাজার ৩৮৬ জন। তবে গত বছরের চেয়ে এবার মোট ৫৫৬টি প্রতিষ্ঠান বেড়েছে। এছাড়া মোট পরীক্ষা কেন্দ্র বেড়েছে ১১১টি।
(আহৃত)