ঈদে বাড়ি ফিরতে অগ্রিম টিকিটের জন্য কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ভোর থেকে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। সেহরির পর এসে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা। তবুও হাল ছাড়ছেন না, টিকিট নিয়েই বাসায় ফিরবেন তারা।
সিরাজগঞ্জের টিকিট কাটবো, গাজীপুর থেকে ভোরে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। ২০–৩০ জন মনে হয় সামনে থেকে কমেছে। সাত ঘণ্টা দাঁড়ানো আর বসার মধ্যেই আছি, বলছিলেন গাজীপুর থেকে ভোরে টিকিট কাটতে আসা মো. রমজান।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে রমজানের মতো অনেককেই টিকিট ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
এ সময় টিকিটপ্রত্যাশীরা বলেন, এখানে রেলওয়ে পুলিশের কোনো তদারকি নেই। আমরা কিভাবে আছি, ভোর থেকে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। আমরা এতোটাই অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি যে, টিকিট পাবো কি না তাও সন্দেহ।
টিকিটের লম্বা লাইন নিয়ে রমজান বলেন, ২০ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা পরপর মনে হয় লাইন থেকে টিকিট দিচ্ছে। এখানে লাইনে আছি আমরা ৩৫০ থেকে ৪০০ জন। অথচ এ পর্যন্ত টিকিট দিয়েছে মনে হয় ৩০টি।
টিকিটের জন্য অপেক্ষার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, শুনতেছি বিকেল ৩টা পর্যন্ত তারা টিকিট দিবেন, তারপর আর দিবেন না। তাহলে আমরা কোথায় যাবো? এই অপেক্ষার পর অপেক্ষা, ভোরবেলা এসে ৭ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বসে থাকা। এ নিয়ে সরকারের কোনো সুষ্ঠু পদক্ষেপ নেই।
এ সময় তিনি ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, কোনো একটা উৎসব বা ঈদ আসলেই মানুষের কষ্ট লাগামহীন হয়ে যায়। টিকিটের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয় দীর্ঘ লাইনে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পরও টিকিট না পেলে আমরা কি করবো?
আমরা টিকিট কেটে যেতে পারবো কি না, নাকি বাসে করেই বাড়ি যেতে হবে কিছু বুঝতেছি না। নতুবা আমাদের ঈদ ঢাকায়ই করতে হবে। টিকিট পাবো কি পাবো না সে ব্যাপারে কাউন্টার থেকেও কেউ কিছু বলছে না।’
সরকারি কিংবা পরিচিত লোকদের টিকিট আগে দিচ্ছে অভিযোগ করে রমজান বলেন, ভিতরে টিকিট নিয়ে সিন্ডিকেট চলছে। প্রশাসনের লোকদের বেশি টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে আমরা টিকিট পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবো।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। ঈদযাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ১ মে থেকে। ট্রেনের টিকিট পেতে ভোর থেকেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা।
(আহৃত)