প্রতি রমজানেই বাজারে শসার চাহিদা স্বাভাবিক দরের চেয়ে আকাশচুম্বী থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু শসা উৎপাদন করে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন দিনাজপুরের শসাচাষিরা। ফলে লোকসানে পড়েছেন তারা।
কয়েক দিন আগে ভালো দাম পেলেও বর্তমানে দাম কমে যাওয়ার কারণে পাইকাররা বীরগঞ্জর উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে এক থেকে দেড় টাকায় কিনছেন প্রতি কেজি শসা।
শসাচাষিদের অভিযোগ, ১০ থেকে ১৫ দিন আগে বাজারে শসার দাম ভালো থাকলেও গত সপ্তাহ থেকে দাম কমতে শুরু করে। রমজানের শুরুতে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শসা ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করলেও কয়েক দিন ধরে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শসার দাম এক থেকে দেড় টাকা। অথচ খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে। এতে লাভের আশায় শসা চাষ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।
উপজেলার ঝড়বাড়ি গ্রামের কৃষক সাকিল ইসলাম বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে সবজির দাম চড়া থাকায় বড় আশা করে শসা চাষ করেছিলাম, এক টাকা কেজি দরে শসা বিক্রি করতে দেখে চোখে পানি ঝরছে। এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করতে খরচ হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। আশা ছিল শসার ফলন ভালো হয়েছে, ভালো লাভ হবে, কারণ রমজান মাসে শসার চাহিদা ভালো থাকে। কিন্তু এখন লাভ তো দূরে থাক, উল্টো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি। এরই মধ্যে ৩০ হাজার টাকা লস হয়েছে আমার।
শসাচাষি শাকিল আহমেদ বলেন, কষ্টে উৎপাদিত ৫০ কেজির শসার একটি বস্তা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করতে কষ্টে আমাদের বুক ফেটে যাচ্ছে। শসার ফলন ভালো হলেও বর্তমান বাজারে দাম না থাকায় খরচের টাকাও তুলতে পারছি না। শসা ছিঁড়তে যে খরচ, সে টাকাই উঠছে না, মূল দাম তো পরে।
পাইকারি ব্যবসায়ি আরিফুল হক বলেন, বাজারে শসার ব্যাপক সরবরাহ রয়েছে। বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা না থাকায় শসার দাম নেই বললেই চলে। আজ দুই টাকা কেজি দরে শসা কিনেছি।
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু রেজা মো. আসাদুজ্জামান জানান, এ বছর বীরগঞ্জ উপজেলায় ২৪৫ হেক্টর জমিতে শসা চাষ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশ জমির ফসল তোলা হয়েছে। চাহিদার বিপরীতে বাজারে শসার সরবরাহ কয়েক গুণ বেশি হওয়ায় বাজারের শসার দাম কমে গেছে। কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
(আহৃত)