অর্থনৈতিক সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে সঙ্কট সমাধানের চেষ্টার করছেন দাবি করে দেশবাসীকে বিক্ষোভ থামানোর আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় সময় সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে এ আহ্বান জানান তিনি।
এ ভাষণে দেশবাসীর উদ্দেশে মাহিন্দা রাজাপাকসে বলেন, আপনারা রাস্তায় যত বিক্ষোভ করবেন, ডলার সংস্থানের ক্ষেত্রে আমাদের তত ক্ষতি হবে। এসময় তিনি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী তরুণদের বিষয়টি যৌক্তিকভাবে ভাবার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা বলেন, সরকারবিরোধী বিক্ষোভে জাতীয় পতাকা বহনকারী বিক্ষোভকারীদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে তাদের দেশের যে কোনো জায়গায় জাতীয় পতাকা রাখতে সক্ষম হন।
মাহিন্দা রাজাপাকসে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কাজে বাঁধা না দেয়ারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দেশের সংকটময় পরিস্থিতিতে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে জনগণকে ধৈর্য ধরতে হবে।
রাজাপাকসে বলেন, তার সরকার দেশের সংকট কাটাতে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এখন যদি ২২৫ জন সংসদ সদস্যকে প্রত্যাখ্যান করার স্লোগান দেয়া হয়, তাহলে সম্প্রতি অতীতের দিকে নজর দিলেই এর বিপদসংকেত বোঝা যাবে। আন্দোলনকারী তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ দেশকে যেন আর অতীতের দিকে টেনে না নিয়ে যাওয়া হয়। গণতন্ত্রকে প্রত্যাখ্যান করার কারণে ৮৮/৮৯ সালের দিকে দেশে প্রচুর রক্তপাত হয়েছিল। সেই সহিংসতার ফলে প্রায় ৬০ হাজার তরুণ প্রাণ হারিয়েছিল।
বিদ্যুৎ বিভ্রাট, গ্যাস ও পানির তীব্র সংকট, খাদ্য সঙ্কট, প্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশচুম্বী দামসহ নানা সমস্যার বেড়াজালে আটকা পড়েছে শ্রীলঙ্কার মানুষ। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি দেশটির অর্থনীতি।
দেশটিতে অর্থনীতি ধসে পড়ার জন্য সরকারকে দায়ী করে গত ৩১ মার্চ রাতে কলম্বোর মিরিহানায় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের ব্যক্তিগত বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে কয়েকশ মানুষ। এতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। শেষ পর্যন্ত টিয়ার শেল আর জলকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৫০ জন। আটক করা হয় আরো ৫০ জনের মতো আন্দোলনকারীকে।