মানবজীবন শুধু ভোগবিলাসের নাম নয়, এটি আসলে দায়িত্ব ও জবাবদিহির দীর্ঘ সফর। মানুষ এই পৃথিবীতে গন্তব্যহীন পথিক হয়ে আসেনি, বরং তার আগমন হয়েছে স্রষ্টার ইচ্ছা পূরণের গুরুদায়িত্ব নিয়ে। সেই দায়িত্ব পালনের জন্য আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে দিয়েছেন এক পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা, যার নাম ইসলাম। আর যেসব মৌলিক বিধান এ ধর্মের ভিত্তি সেগুলো মানা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আবশ্যক ও অনিবার্য।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসলামের কাঠামোকে এক স্থাপত্যের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত।’
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৬)
কোনো অট্টালিকা যেমন স্তম্ভ ছাড়া দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না, মুসলিমের ঈমানও তেমনি এই মৌলিক স্তম্ভগুলো ছাড়া অটুট থাকে না। এই স্তম্ভগুলো হলো—ঈমান, নামাজ, জাকাত, রোজা এবং হজ।
শাহাদাহ হলো ঈমানের ঘোষণা—‘আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রাসুল’—এটি কেবল একটি উচ্চারণ নয়, বরং আজীবন ধারণ করা এমন এক প্রতিশ্রুতি, যাতে মানুষ তার জীবনকে আল্লাহর দাসত্বে সঁপে দেয়।
নামাজ হলো দৈনিক আত্মশুদ্ধির অনুশীলন—পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মানুষকে যেমন শৃঙ্খলাবদ্ধ করে, তেমনি অন্যায়, অশ্লীলতা ও পাপ থেকে বিরত রাখে।
জাকাত শুধু দান নয়, বরং এটি সমাজে সম্পদের সুষম বণ্টনের আল্লাহ প্রদত্ত ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে ধনী-গরিবের মধ্যে সেতুবন্ধ সৃষ্টি হয়।
রোজা হলো আত্মার পরিশুদ্ধি ও সংযমের মহাসাধনা। ক্ষুধা-তৃষ্ণার কষ্ট মানুষকে ধৈর্য শেখায় এবং অপরের দুর্দশা অনুভব করার যোগ্য করে তোলে।