বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী দেশের সেবা করার সুযোগ পেলে মালিক নয়, সেবক হবে। তিনি ঘোষণা করেন, আগামীতে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুটি বড় লড়াই হবে। বিশেষ করে দুর্নীতির মূল উৎপাটনের জন্য তারুণ্য ও যৌবনের শক্তিকে একত্রিত করে এই লড়াইয়ে জয়ী হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। গতকাল শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাত দফা দাবিতে আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান গত ১৫ বছরের “কঠিন অন্ধকার যুগে” নির্যাতিত ও শহীদদের প্রতি গভীর ঋণ স্বীকার করেন। তিনি বলেন, জামায়াতের অস্তিত্ব যতদিন থাকবে, তারা সেই ঋণ শোধ করার চেষ্টা করবেন। তিনি আবু সাঈদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, তাদের জীবন উৎসর্গ না করলে হয়তো আজকের বাংলাদেশ দেখা যেত না।
জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ত্যাগের মাধ্যমে প্রাপ্ত এই নিয়ামতকে অবজ্ঞা না করে এবং অহংকার পরিহার করে রাজনৈতিক শিষ্টাচার রক্ষা করে জাতীয় ঐক্যের বীজতলা গড়ে তুলতে হবে।
দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করলে কোনো এমপি বা মন্ত্রী সরকারি প্লট, ট্যাক্সবিহীন গাড়ি এবং ব্যক্তিগতভাবে টাকা লেনদেন করবেন না। কাজ শেষ হওয়ার পর জনগণের কাছে কাজের প্রতিবেদন তুলে ধরতে তারা বাধ্য থাকবেন। তিনি আরও যোগ করেন, “চাঁদা আমরা নিব না, দুর্নীতি আমরা করব না। চাঁদা আমরা নিতে দেব না, দুর্নীতি আমরা সহ্য করব না।”
ডা. শফিকুর রহমান নিজেকে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থাপন করে বলেন, তার লড়াই সব মানুষের মুক্তির জন্য, কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির জন্য নয়। তিনি রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে জেল-জুলুমের পরোয়া করেননি উল্লেখ করে বলেন, ২০২৪ সালে যারা জাতিকে মুক্তি দিতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন, তাদের একজন হতে না পারার আফসোস তার রয়েছে।
তিনি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে শাপলা গণহত্যা, পিলখানার গণহত্যা এবং ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার দাবি করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই পুরনো ও পচা ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ আর চলতে পারে না, যারা এই ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে চায়, তাদের নিহতদের জীবন ফিরিয়ে দিতে চ্যালেঞ্জ জানান।