1. admin@banglarakash.com : admin :
August 23, 2025, 5:56 am

ফ্যাসিবাদ পতনের সূচনাবিন্দু, জুলাই গণঅভ্যূথান

BanglarAkash desk
  • Update Time : Tuesday, July 1, 2025,
  • 41 Time View
Spread the love

আজ ১ জুলাই। এই দিনটিকে বলা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের সূচনাবিন্দু। গত বছরের এই দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শুরু হয় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন। যা শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদবিরোধী গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। এর আগে ২০১৮ সালে ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলনের চাপে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ওই বছরের ৪ অক্টোবর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে। সরকারের জারি করা এই পরিপত্র ২০২৪ সালের ৫ জুন বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ অবৈধ ঘোষণা করে। এর বিরুদ্ধে পুনরায় কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন নতুনভাবে আলোচনায় আসে। হাইকোর্টের রায় প্রত্যাখ্যান করে ওই দিন সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকেই বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। ঘোষণা অনুযায়ী ৬ জুন বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বড় বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত ওই বিক্ষোভ মিছিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজসহ ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কলাভবন, টিএসসি ঘুরে মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানেই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশ থেকে আদালতের রায় মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ও বর্তমান জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, এটা আমরা মেনে নেব না। কোটা বাতিলের আগের পরিপত্র অবশ্যই বহাল রাখতে হবে। এর বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সেটা নিতে হবে। পরে তিনি কোটা আন্দোলনের অন্যতম পরিচিত মুখ, তথা প্রধান নেতা হয়ে ওঠেন।

সেদিনের সমাবেশে আন্দোলনকারীরা বলেছিলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়া না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। কোটা বহালের রায়ের প্রতিবাদে একই দিন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একইভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও মাঠে নামেন। এমন পরিস্থিতিতে ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর কিছুদিনের মধ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ায় ২৯ জুন পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। এর পর ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় ১ জুলাই ঢাবি, জগন্নাথ, জাবি, রাবি, চবি, বরিশাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়েন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। ১ জুলাই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে নতুন একটি প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আন্দোলন দ্রুতগতিতে সারাদেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

কীভাবে জুলাই আন্দোলনের শুরু ও বিস্তৃতি- এ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনের তিন দিনের মধ্যে ঈদের বন্ধ চলে আসে। বন্ধের আগে আমরা অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়ে এসেছিলাম। প্রাথমিক দাবি ছিল, রায় স্থগিত করে আগের পরিপত্র বহাল করা। ঈদের বন্ধ থাকায় আমরা একটা আল্টিমেটাম দেই ৩০ জুন পর্যন্ত। যাতে এই সময়টার মধ্যে সরকার একটা ব্যবস্থা নেয়। আমাদেরও ধারণা ছিল সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে না। এ কারণে আমরা এই সময়টাতে আন্দোলনের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নিজেদের সংগঠিত করি। ৩০ জুন সরকার থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই রায়ের বিরুদ্ধে এবং কোটা সংস্কারের পক্ষে আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুরসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। অনলাইনে মিটিং এবং ফেসবুকে ক্যাম্পেইন করি। এভাবে আমরা সবার সঙ্গে একটা নেটওয়ার্ক স্থাপন করি। যখন দেখলাম সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত কিছু করা হলো না, তখন ১ জুলাই আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে প্রথমবারের মতো কর্মসূচি পালন করি।

 


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT