1. admin@banglarakash.com : admin :
August 23, 2025, 8:51 pm

অপহরণ অভিযোগের সেই মেয়েটি অবশেষে ফরিদপুরে সেফ হোম থেকে মুক্ত

Reporter Name
  • Update Time : Wednesday, October 9, 2024,
  • 19 Time View
Spread the love

বাংলার আকাশ ডেস্কঃ
অপহৃত হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠা সেই কিশোরী (১৬) ফরিদপুর সেফ হোম থেকে মুক্ত হয়েছে। ফরিদপুরের ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের ওই কিশোরীকে সংবাদকর্মীসহ স্থানীয়দের সামনে কথা বলতে দেয়া হয়নি অজ্ঞাত কারণে। কিশোরীর পরিবার ইতিপুর্বে তাকে (কিশোরীকে) খ্রিস্টান ধর্মে দিক্ষিত করার লক্ষ্যে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো বলে অভিযোগ তুলেছিলেন সংবাদকর্মীদের কাছে, যা তোলপাড় সৃষ্টি করেছিলো এলাকায়।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত ০৪ এপ্রিল ওই কিশোরীকে তার বাড়ীর সামনে থেকে মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় ছয়জনকে আসামী করে ২৫ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে কিশোরীর মা রওশনারা বেগম বাদী হয়ে মামলা দয়ের করেন। কিশোরীর গৃহ শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বাবু, আপন মামী আম্বিয়া বেগম, স্কুল পড়ুয়া মামাতো ভাই সিয়াম ব্যাপারিসহ সহযোগি বিল্লাল, রুবেল এবং আলম মিয়াকে, তাকে (কিশোরী) জোরপূর্বক অপহরণ ও সহায়তা করেছে উল্লেখ করে আসামী করা হয়। আদালতের নির্দেশে ০২ মে মামলাটি কোতয়ালী থানায় নথিভুক্ত করা হয়। মামলার অভিযোগে শরিফুল ইসলাম বাবুকে প্রধান আসামী করা হয় এবং ওই কিশোরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের সময় গৃহ শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বাবু কু-প্রস্তার দিতেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
মামলা দায়েরের পর ১৮ মে ওই কিশোরী মামীর সাথে কোতয়ালী থানায় হাজির হলে তাকে সেফ হোমে পাঠানো হয়। জবান বন্দিতে তিনি (কিশোরী) মামীর সাথে ভালো সম্পর্ক থাকায় মা বকা দিতো উল্লেখ করেন এবং মায়ের বকার কারণেই স্বেচ্ছায় মামীর কাছে চলে গিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন।
মামলার আইনজীবি গোলাম মনসুর নান্নু জানান, ১৮ মে আদালতে উপস্থাপনের পর বাবা মায়ের জিম্মায় দিতে চাইলে ওই কিশোরী যেতে অস্বিকৃতী জানায়। এসময় তার মা রওশনারা বেগম তাকে (কিশোরী) জোরপুর্বক বয়স্ক ব্যাক্তির সাথে বিবাহ দেয়ার চেষ্টা করছে বলে জানালে আদালত তাকে সেফ হোমে পাঠায়। পরে একাধিকবার আদালতের ধার্য তারিখে আদালত মায়ের জিম্মায় পাঠাতে চাইলে সে (কিশোরী) যেতে অস্বিকৃতি জানায়।
এদিকে ওই কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে শরিফুল ইসলাম বাবু ও তার সাথী সঙ্গীরা, তাকে (কিশোরী) ফুসলিয়ে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করার লক্ষ্যে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দাবী করা হয়। এমনকি আরো অনেককে একইভাবে প্রলোভন দেখিয়ে খ্রিস্টান ধর্মে দিক্ষিত করার উদ্ধেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তাদেরকে একটি “বিশেষ চক্র” ট্যাগ দেয়া হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ব্যপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এলাকাবাসীর মধ্যে। এমনকি জনরোষ তৈরি হলে গা ঢাকা দেন শরিফুল ইসলাম বাবু।
এরই মধ্যে গত ০৬ অক্টোবর ওই কিশোরীকে পিতার জিম্মায় সেফ হোম থেকে মুক্তি দেয়া হয়। তার মুক্তির খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীসহ উৎসুকরা প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধানে ওই কিশোরীর বাড়ীতে গেলেও অজ্ঞাত কারনে তাকে সামনে আনা হয়নি, এমনকি কোনো ধরনের কথাও বলতে দেয়া হয়নি। এসময় পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান বাবা আয়ুব আলী ও মা রওশনারা বেগম। এসময় তারা বারবার বলেন, মেয়ে পেয়ে গেছি আমাদের আর কোনো অভিযোগ নেই।
এ মামলার এক নম্বর আসামী শরিফুল ইসলাম বাবু জানান, ওই কিশোরীর মা ও বাবার অপপ্রচারের কারণে তিনি নিজ এলাকায় থাকতে পারছেন না। প্রাণ সংশয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যে কোনো সময় তার উপর হামলা হতে পারে বলে জানান তিনি। বাবু এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করেন।
আর কিশোরীর মামি আম্বিয়া বেগম জানান, মামলার বাদী ও কিশোরীর মা রওশনারা বেগম খুবই দূধর্ষ প্রকৃতির মানুষ, তিনি তার আপন ননদ। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তিনি একই উপজেলার আনন্দবাজার এলাকায় শশুর বাড়ীর লোকজনের সাথে বনিবনা না হওয়ায় জামাইকে নিয়ে বাবার বাড়ীতে বসবাস করছেন। তিনি দাবী করেন, তার (রওশনারা) অত্যাচারে বাড়ী-ঘর ফেলে তারা ঢাকাতে চলে যান। তিনি বলেন, ভিকটিক মেয়েটিকে ছোটো বেলা থেকেই কোলেপিঠে করে মানুষ করায় তার সাথে সখ্যতা বেশী। আর মা রওশনারা তার মেয়েটির সাথে বকাবাজি এবং অসদাচারণসহ ইচ্ছার বিপরীতে নানা ধরনের কাজ করানোর চেষ্টা করায় মেয়েটি আগে থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলো মায়ের উপর। ওই দিনও বকা দেয়ায় সে রাগান্বিত হয়ে আমার কাছে ঢাকায় চলে যায়। মামলা হওয়ার পর তিনি নিজেই সাথে করে থানায় কিশোরীকে উপস্থাপন করেন বলেও জানান।
তিনি আরো বলেন, নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্যে রওশনারা (কিশোরীর মা) আমাদের সবাইকে খ্রিস্টান ট্যাগ দিয়েছেন। এতে আমরা সমাজের চোখে ঘৃণিত হচ্ছি এবং বর্তমানে প্রাণ সংশয়ে আছি। এ ঘটনায় তিনি সুষ্ঠু প্রতিকার দাবী করেন।
আর ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল জানান, খ্রিস্টান ধর্মে দিক্ষিত করার কোনো অভিযোগ কেউ করেনি পুলিশের কাছে। তবে অপহরন মামলা হয়েছিলো। ওই কিশোরীকে সেফ হোম থেকে বাবার জিম্মায় দেয়া হয়েছে।

Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT