1. admin@banglarakash.com : admin :
August 24, 2025, 3:02 pm

ফরিদপুরে চাঞ্চল্যকর অন্তর হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসির আদেশ

বাংলার আকাশ নিউজ ২৪ ডট কম Email:banglarakashnews24@gmail.com
  • Update Time : Wednesday, March 27, 2024,
  • 14 Time View
Spread the love

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

ফরিদপুরের নগরকান্দার তালমার স্কুলছাত্র আলাউদ্দিন মাতুব্বর অন্তর (১৪) হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসি ও আরো ৩ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের অন্য ধারায় যাবজ্জীবন এবং বাকি আসামিদের একটি ধারায় ১৪ বছরের এবং অপর একটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও সর্বমোট এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, নগরকান্দার চরমানিকদি গ্রামের হাবিব বেপারির ছেলে মাহাবুব আলম, পিপরুল গ্রামের আলতাফ মাতুব্বরের ছেলে কামাল মাতুব্বর ও দক্ষিণ বিলনালিয়া গ্রামের মোবারক মাতুব্বরের ছেলে খোকন মাতুব্বর। তাদের প্রত্যেককে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৭ ধারায় ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৮ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয়। এছাড়া এ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পাগলপাড়া গ্রামের দুলাল শেখের ছেলে আশরাফ শেখ ও আজিজুল শেখ এবং দক্ষিণ বিলনালিয়া গ্রামের আক্তারুজ্জামানের ছেলে সুজন মাতুব্বর। তাদের প্রত্যেককে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৭ ধারায় ১৪ বছর এবং ৮ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ডে দণ্ডিত করা হয়। এছাড়া দন্ডবিধি ৩০২/৩৪ ধারায় তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং ১ লাখ টাকা করে অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আজিজুল শেখ ছাড়া বাকি পাঁচ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশ পাহারায় তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এদিকে, রায় ঘোষণার পরে আদালত থেকে হাজতখানায় নেয়ার সময় লিফটের মধ্যে আসামিরা পরস্পরে ঝামেলায় লিপ্ত হয়। এছাড়া রায় ঘোষণা উপলক্ষে বাদি ও বিবাদি উভয় পক্ষের সমর্থকেরা উপস্থিত হন। সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর আগে ১৩ মার্চ এ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ছিলো। সেদিন নিহত অন্তরের পরিবারের উপর হামলা করে আসামিদের লোকজনেরা। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৭ জুন রাতে তারাবির নামাজ পড়ার জন্য বাসা থেকে বের হওয়ার পরে অপহরণ করা হয় ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের চর মানিকদী পাগলপাড়া গ্রামের প্রবাসী আবুল হোসেন মাতুব্বরের ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে আলাউদ্দিন মাতুব্বর অন্তর। পরেরদিন এ ঘটনায় অন্তরের মা জান্নাতি বেগম নগরকান্দা থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করার পরে ওই রাতেই জান্নাতির মোবাইলে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ১৪ জুন পুলিশের উপস্থিতিতে একটি ইরিব্লকের মেশিনঘরে টাকা রেখে অপহরণকারীদের নগদ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেয়া হয়। ১৫ জুন অন্তরের মা ১৬ জনের নামোল্লেখ করে নগরকান্দা থানায় অপহরণ মামলা করেন। মামলা নং-১৪। এরপর ২২ জুন ফরিদপুর প্রেসক্লাবে অন্তরের পরিবারের সংবাদ সম্মেলন করে। পরেরদিন পত্রপত্রিকায় এ খবর ছবিসহ প্রকাশের পর ২৪ জুন পুলিশ মুক্তিপণ দাবিকৃত মোবাইলের মালিক মাহবু্ব আলম ও তার ভাই জুবায়ের বেপারিকে গ্রেফতার করে। এরপর তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ২৬ জুন রাতে পুলিশ চকের মধ্যে উল্টো করে পুঁতে রাখা আলাউদ্দিন মাতুব্বর অন্তরের লাশ উদ্ধার করে। ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর নগরকান্দা থানার এসআই নিখিল চন্দ্র অধিকারী ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তিনি বস্তুনিষ্ঠ সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় গ্রেফতার অপর আসামি জুবায়েরকে দায় হতে অব্যাহতির আবেদন করেন। এদিকে, রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নিহত অন্তরের মা জান্নাতি বেগম আবেগে বাকরুদ্ধ হয়ে যান। তিনি বলেন, সন্তানের হত্যাকারীদের ফাঁসির আদেশ দেয়ায় আমি সন্তুষ্ট। আমি চাই এই রায় অবিলম্বে কার্যকর করা হোক। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) স্বপন কুমার পাল জানান, দীর্ঘ সাক্ষ্য শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। এর মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলো। আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অনিমেষ রায় ও অ্যাডভোকেট বিমল তুলশিয়ান বলেন, এ রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন। তারা উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। জাল নথিপত্র দিয়ে হাইকোর্টে জামিন নেয় আসামিরা: অন্তর হত্যা মামলার শুরু থেকেই আসামিরা নানা নাটকিয়তার মধ্য দিয়ে অবৈধভাবে সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করে। তারা প্রথমে মামলা না করার জন্য অন্তরের পরিবারকে চাপ দিতে থাকে। ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সংবাদ সম্মেলন করতে এলে অন্তরের মা জান্নাতি বেগমের মোবাইলে ফোন করে তাকে সংবাদ সম্মেলন করায় ধমকানো হয়। অন্তরের লাশ উদ্ধারের পর মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়া হয়। আসামিদের পক্ষে মানববন্ধন, সমাবেশও হয়। এরপর নিম্ন আদালতে জবানবন্দি সহ অন্যান্য নথিপত্র জালিয়াতি করে উচ্চ আদালত থেকে মামলার প্রধান আসামিরা জামিনও নেয়। পরে বিষয়টি জানতে পেরে নিহত অন্তরের বাবা আবুল মাতুব্বর বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করলে বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে আসে।


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT