1. admin@banglarakash.com : admin :
September 9, 2025, 10:38 pm

লাখো কৃষক জিম্মি হয়ে আছে অপারেটরদের হাতে

বাংলার আকাশ নিউজ ২৪ ডট কম Email:banglarakashnews24@gmail.com
  • Update Time : Thursday, February 1, 2024,
  • 29 Time View
Spread the love

সেচের কাজে নিয়োজিত গভীর নলকূপ অপারেটররা জমিদারের উমেদারের ভূমিকায় যেন অবতীর্ণ হয়েছে। তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে বরেন্দ্র অঞ্চলের কয়েক লাখ কৃষক।জমিদারি ব্যবস্থায় কৃষক শোষণের কথা জানা গেলেও, সেরকম চিত্রই যেন শত বছর পর মিলল রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠে মাঠে।

সেচের জন্য নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ অর্থ তারা কৃষকদের কাছ থেকে আদায় করছে। অপারেটরদের অনৈতিক দাবি কৃষকরা না মানলে তাদের জমিতে পানি দেওয়াই বন্ধ করে দেয় অপারেটররা। ২০২২ সালের মার্চে সেচ না পেয়ে বরেন্দ্রের গোদাগাড়ি এলাকায় দুজন কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটে। চলতি আলু ও বোরো মৌসুমে বরেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় গভীর নলকূপ অপারেটররা কৃষকদের জিম্মি করে সেচের চার্জ বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) পরিচালিত গভীর নলকূপ অপারেটরদের বেপরোয়া সেচ বাণিজ্যের কবলে পড়ে রাজশাহী অঞ্চলের কৃষকদের অবস্থা এখন শোচনীয়। কৃষকদের কষ্টের ফসলের বড় অংশই চলে যাচ্ছে গভীর নলকূপ অপারেটরদের পেটে। সরকারের সেচ ভর্তুকি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক। খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চল রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোর জেলা এলাকা নিয়ে গঠিত। রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের মূল পেশা কৃষি। তিন দশক আগেও বরেন্দ্রের তপ্ত উত্তপ্ত লাল মাটিতে বছরে একটিমাত্র ফসল হতো। বৃষ্টি নির্ভর আমন ফসলের পর সারা বছরই বরেন্দ্রের লাখ লাখ হেক্টর জমি পতিত পড়ে থাকত। ১৯৯১ সালে কৃষি মন্ত্রণালয় বরেন্দ্র প্রকল্পের আওতায় গভীর নলকূপ স্থাপন শুরু করলে বরেন্দ্রের কৃষি চিত্র দ্রুত বদলে যেতে শুরু করে। এখন বরেন্দ্রের মাটিতে বছরে তিন চারটি ফসল উৎপন্ন হয়। তবে বরেন্দ্রের পুরো কৃষি ব্যবস্থাটা নিবিড় সেচনির্ভর। ফলে গভীর নলকূপের পানি কৃষকের কাছে যেন সোনার হরিণ। আর এই সেচ ব্যবস্থাটাই গভীর নলকূপ অপারেটরদের হাতে জিম্মি।

এক সময় বরেন্দ্রের গভীর নলকূপগুলো ডিজেল চালিত হলেও এখন চলে বৈদ্যুতিক মোটরে। ফলে কৃষকের সেচ খরচ অনেক কম হওয়ার কথা। কিন্তু কৃষকরা সেই সুবিধা মোটেও পান না। সেচের নীতিমালায় আছে ঘণ্টায় ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা চার্জ নেওয়া যবে। কিন্তু নলকূপ অপারেটররা ঘণ্টার বদলে ফসল মৌসুমের জন্য কৃষকদের কাছ থেকে অগ্রিম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আদায় করছে। কোনো কৃষক অপারেটরের শর্তে রাজি না হলে তার জমিতে সেচ দেওয়া বন্ধ রাখা হচ্ছে। বিএমডিএ সূত্রে জানা গেছে, সেচ সুবিধা নিশ্চিতে প্রতিটি গভীর নলকূপে কমিশন ভিত্তিতে একজন অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়। কৃষকরা প্রি-পেইড সেচ কার্ড নিয়ে অপারেটরদের কাছে গেলে কোনো পানি পান না। ১ ঘণ্টা সেচের জন্য ১২৫ টাকা মূল্যের প্রি-পেইড কার্ড লাগে। অথচ ১ ঘণ্টার জন্য অপারেটরদের দিতে হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। অনেক অপারেটরের অধীনে একাধিক নলকূপও থাকে। এমনকি এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন লোকজনও ঘুসের বিনিময়ে একাধিক নলকূপ অপারেটর হয়েছেন। তানোরের নারায়ণপুর গ্রামের কৃষক মইফুল ইসলাম বলেন, গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগ হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। তাই চলে বেপরোয়া সেচ বাণিজ্য।

তবে তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়ন এলাকার অপারেটর দুরুল হুদা দাবি করেন, কৃষকদের অভিযোগ সত্য নয়।

জানতে চাইলে বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, গভীর নলকূপের প্রকারভেদে ঘণ্টাপ্রতি ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা সেচ চার্জ ধার্য করা আছে। কোনো অপারেটর এই নিয়ম লঙ্ঘন করে কৃষকের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো অপারেটর অন্যায়ভাবে অতিরিক্ত অর্থ চাইলে ভুক্তভোগীরা যেন অভিযোগ দেন-পরামর্শ দেন তিনি।


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT