এস ইসলাম:
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গত শুক্রবার দুপুর বেলায় দেলোয়ার হোসেন, পরিচালক আমানা গ্রুপ এবং কাদেরদী দিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এর বৃদ্ধ মা বাড়ি সংলগ্ন পুকুরে গোসল করতে গেলে, উঠতি বয়সী স্থানীয় ছেলেরা পুকুরের পানি ঘোলা করতে থাকে এবং বিভিন্ন ভাবে দেলোয়ার হোসেনের বৃদ্ধ মাতাকে নাজেহাল করতে থাকে। দেলোয়ার হোসেন উক্ত বিষয়টি জানা মাত্রই স্থানীয় বোয়ালমারী পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করে, পুলিশ প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত অভিযোগে একই গ্রামের মৃত বিল্লাল বিশ্বাসের ছেলে রিফাতকে (১৬) আটক করে থানা পুলিশ। পরে সন্ধ্যায় কাদিরদী বাজারের এক দোকানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টু, মো. দেলোয়ার হোসেন এবং অভিযুক্তদের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে, ঈদের পরে এ বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করা হবে। আর অভিযোগ তুলে নিয়ে আটককৃত রিফাতকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনা হবে। সে মোতাবেক দেলোয়ার থানায় ফোন দিয়ে রিফাতকে ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাদিরদী বাজার থেকে রিফাতের সহোদর মোবারক বিশ্বাস (২৫) ও রুবেল বিশ্বাসের (৩২) নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের দুর্বৃত্তরা মো. দেলোয়ার হোসেনকে খুন করার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাতৈর ইউপি চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টু জানান, কাদিরদী বাজারের আব্দুল্লাহ বিশ্বাসের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ঘরে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক এমপি আব্দুর রহমানের সাথে আমানা গ্রুপের পরিচালক ও কাদিরদী দ্বিমুখী বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ঈদ পূর্ববর্তী সৌজন্য সাক্ষাৎ চলছিল।
তিনি আরো জানান, সাক্ষাতের শেষ পর্যায়ে দেলোয়ার বাইরে গেলে ১৫/২০ জনের দুর্বৃত্তের দল দেশিয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে চিকিৎসকরা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী ফরিদপুর সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর বলেন, ‘বিষয়টি শোনার সাথেই স্থানীয় থানার ওসি ও আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হামলায় আহত ব্যক্তির খোঁজ-খবর নিতে হাসপাতালে পুলিশ সুপার গিয়েছিলেন। পুলিশের তত্ত্বাবধায়নে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালে রাতেই পাঠানো হয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা রেকর্ড করা হবে।’
মো. দেলোয়ার হোসেনকে (৪২) বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কাদিরদী গ্রামের মৃত সাদেক শেখের ছেলে ও আমানা গ্রুপের পরিচালক এবং কাদেরদী দিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কাদিরদী বাজারের আব্দুল্লাহ বিশ্বাসের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। শনিবার রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুইটি অপারেশন শেষে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন বলে জানা গেছে।