বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের প্রথম টি ২০ সিরিজ জয়ের নায়ক ছিলেন সিকান্দার রাজা। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটিতেই তিনি ফিফটি হাঁকিয়েছিলেন। এবার সেই রাজার ব্যাটেই নয় বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতল জিম্বাবুয়ে।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতেই অপরাজিত সেঞ্চুরিতেই দলকে জিতিয়ে ফেরেন রাজা। আগের ম্যাচে করেছিলেন ১৩৫* রান। কাল ১২৭ বলে ১১৭ রানের অপরাজিত ইনিংসে আবারও ম্যাচসেরা রাজা। সেঞ্চুরি পেয়েছেন রেজিস চাকাভাও (১০২)। এ দুজনের ব্যাটেই বাংলাদেশকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিল স্বাগতিকরা। রাজা-চাকাভার ঝলকে বিফলে গেছে তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহর ফিফটি।
হারারেতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারের ৫৪তম ফিফটির পর বেশি দূর যেতে পারেননি তামিম ইকবাল। দ্বিতীয় ম্যাচেও তাকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে হাফ সেঞ্চুরি করেই। ক্যারিয়ারের ৫৫তম ওয়ানডে ফিফটির পরই আউট হন বাংলাদেশ অধিনায়ক (৫০)।
একইদিনে ক্যারিয়ারের ২৬তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ডান-হাতি ব্যাটার মাহমুদউল্লাহও। অন্যপ্রান্ত থেকে ভালো সমর্থন না পাওয়ায় শেষ দিকে ঝড় তুলতে পারেননি তিনি। ৮৪ বলে ৮০* রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন। প্রথম ওয়ানডেতে চার হাফ সেঞ্চরিতে বাংলাদেশ করেছিল ৩০৩ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে তামিমের ৫৫তম এবং মাহমুদউল্লাহর ২৬তম হাফ সেঞ্চুরিতে নয় উইকেটে ২৯০ রান করে সফরকারীরা।
বর্তমানে ওয়ানডে ক্রিকেটে খেলছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে ভারতের বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার পর তৃতীয় সর্বোচ্চ রান তামিমের। দারুণ ফর্মেও রয়েছেন।
আগের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসাবে ওয়ানডেতে আট হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এই ফরম্যাটে তার রান এখন ৮০৫৫। সবশেষ ছয় ম্যাচে তার হাফ সেঞ্চুরি চারটি। দুর্দান্ত ফর্মে থেকেও সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ থেকেই যাচ্ছে। কাল টানাকা চিভাঙ্গাকে পুল করে ওড়ানোর চেষ্টায় থামেন তামিম। ৭১ রানে ভাঙে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। চিভাঙ্গার বাড়তি বাউন্সের জন্য টাইমিং করতে পারেননি তামিম। ডিপ স্কয়ার লেগ থেকে কিছুটা দৌড়ে ক্যাচ নেন টাকুডজোয়ানাশে কাইটানো। এদিন শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন তামিম। আগের ম্যাচের অভিজ্ঞতা থেকেই হয়তো ধীরে খেলতে চাননি তিনি। ৪৫ বলের ইনিংসে ছিল ১০ চার ও এক ছক্কা। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ অধিনায়ক আউট হয়েছিলেন ৬২ করে। তামিম উইকেটে থাকা পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর তিনশ ছাড়ানোর সম্ভাবনা দেখাচ্ছিল। কিন্তু এই ওপেনার আউট হওয়ার পর ঘটে ছন্দপতন। ছয় রানের ব্যবধানে ভালো খেলতে থাকা এনামুল হক রানআউট হয়ে ফেরেন। পরে নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেনরা থিতু হয়ে আউট হয়ে ফিরেছেন।
স্কোর কার্ড
বাংলাদেশ
রান বল ৪ ৬
তামিম ক কাইতানো ব চিভাঙ্গা ৫০ ৪৫ ১০ ১
এনামুল রানআউট ২০ ২৫ ৩ ০
নাজমুল ক চাকাভা ব মাধেভেরে ৩৮ ৫৫ ৫ ০
মুশফিক ক মুনিয়োঙ্গা ব মাধেভেরে ২৫ ৩১ ১ ০
মাহমুদউল্লাহ নটআউট ৮০ ৮৪ ৩ ৩
আফিফ ক চিভাঙ্গা ব রাজা ৪১ ৪১ ৪ ০
মিরাজ এলবিডব্লু ব রাজা ১৫ ১২ ২ ০
তাসকিন এলবিডব্লু ব রাজা ১ ২ ০ ০
তাইজুল ক ইভান্স ব নিয়াউচি ৬ ৪ ১ ০
শরীফুল রানআউট ১ ২ ০ ০
অতিরিক্ত ১৩
মোট (৯ উইকেটে, ৫০ ওভারে) ২৯০
উইকেট পতন : ১/৭১, ২/৭৭, ৩/১২৭, ৪/১৪৮, ৫/২২৯, ৬/২৪৯, ৭/২৬৫, ৮/২৮৩, ৯/২৯০।
বোলিং : ইভান্স ৭.৪-০-৬৪-০, নিয়াউচি ৮-০-৩৯-১, চিভাঙ্গা ৮.২-০-৪৯-১, সিকান্দার রাজা ১০-০-৫৬-৩, মাধেভেরে ৯-১-৪০-২, জঙ্গুয়ে ৭-০-৪০-০।
জিম্বাবুয়ে
রান বল ৪ ৬
মারুমানি ক মিরাজ ব তাইজুল ২৫ ৪২ ৩ ০
কাইতানো ক মুশফিক ব হাসান ০ ১ ০ ০
কাইয়া ক মুশফিক ব হাসান ৭ ৮ ১ ০
মাধেভেরে এলবিডব্লু ব মিরাজ ২ ১৬ ০ ০
রাজা নটআউট ১১৭ ১২৭ ৮ ৪
চাকাভা ক তামিম ব মিরাজ ১০২ ৭৫ ১০ ২
মুনিয়োঙ্গা নটআউট ৩০ ১৬ ২ ২
অতিরিক্ত ৮
মোট (৫ উইকেটে, ৪৭.৩ ওভারে) ২৯১
উইকেট পতন : ১/১, ২/১৩, ৩/২৭, ৪/৪৯, ৫/২৫০।
বোলিং : হাসান ৯-১-৪৭-২, মিরাজ ১০-০-৫০-২, শরীফুল ৯-০-৭৭-০, তাসকিন ৯-০-৬২-০, তাইজুল ১০-০-৪৮-১, আফিফ ০.৩-০-৬-০।
ফল : জিম্বাবুয়ে ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : সিকান্দার রাজা (জিম্বাবুয়ে)
আহৃত