ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে ভুয়ারকান্দি দাখিল মাদ্রাসার নিয়োগ নিয়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সুপার ও বিদ্যোৎসাহী এক সদস্য মিলে নিয়োগের নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিয়োগ নিয়ে আর্থিক দুর্নীতির বিষয়ে স্থানীয়রা দুর্নীতি দমন কমিশন, ইউএনওসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুয়ারকান্দি দাখিল মাদ্রাসার শূন্য পদে চারজন নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। এতে সুপার পদে চারজন, নৈশপ্রহরীতে ৯ জন এবং আয়া পদে সাতজন আবেদন করেন।
নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার রুহুল আমিন ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য জামাল হোসেন শাহজাহান বিভিন্নজনের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে সুপার ও আয়া পদের ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নেন।
অভিযোগ রয়েছে, সুপার পদে সাত লাখ টাকা এবং আয়া ও নৈশপ্রহরী পদে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়েছেন তারা। যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে তাদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে।
আয়া ও নৈশপ্রহরী পদে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করেন মাদ্রাসার বিদ্যোৎসাহী সদস্য জামাল হোসেন শাহজাহানের স্ত্রী ও কন্যা। সেই প্রশ্নপত্র টাকা নেওয়া প্রার্থীদের পরীক্ষার আগেই সরবরাহ করা হয়। গত ১ জুলাই পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।
নিয়োগ নিয়ে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার ও বিদ্যোৎসাহী সদস্যের আর্থিক লেনদের বিষয়ে মোবাইলে কথোপকথন ফাঁস হলে তোলপাড় শুরু হয়। মাদ্রাসার সুপার, আয়া ও নৈশপ্রহরী নিয়োগ নিয়ে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি জানার পর স্থানীয়দের মাঝে এবং যারা বিভিন্ন পদে আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
পরে এ বিষয়ে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদনে বলা হয়। আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে স্থানীয় বাসিন্দা মুন্সি আ. কাইয়ুম, মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্য আ. গাফফার মুন্সি, মো. আফছার সেক, পরীক্ষার্থী মো. মনিরুজ্জামান, পরীক্ষার্থীর অভিভাবক মো. জাহিদ হোসেন আর্থিক লেনদেনের প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সুপার রুহুল আমিন বলেন, সঠিক নিয়মেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। টাকা নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। মাদ্রাসার কমিটিতে যারা আসতে পারেননি, তারাই মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন।
মাদ্রাসার বিদ্যোৎসাহী সদস্য জামাল হোসেন শাহজাহান বলেন, নিয়োগে কোনো দুর্নীতি বা আর্থিক লেনদেন হয়নি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই করা হয়েছে। টাকা লেনদেনের যে অভিযোগ উঠেছে, তা একান্তই তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। আমার কাছে কথোপকথনের অডিও অভিযোগ আকারে দেওয়া হয়েছিল। আমি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেছি।
আহৃত