1. admin@banglarakash.com : admin :
September 15, 2025, 11:32 pm

জ্বালানির উত্তাপে দগ্ধ যাত্রীরা বিক্ষুব্ধ

বাংলার আকাশ ডট কম email:banglar.akash.sif@gmail.com
  • Update Time : Sunday, August 7, 2022,
  • 112 Time View
Spread the love

এক লাফে জ্বালানি তেলের দাম গড়ে ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধিতে জনমনে তীব্র ক্ষোভ, সংশয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার মূল্যবৃদ্ধির রাতে তেলের জন্য পাম্পে পাম্পে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, এর প্রভাব দেখা যায় শনিবারও। এদিন ঢাকাসহ দেশজুড়ে গণপরিবহণ সংকট ছিল চরমে। তেলের দামের সঙ্গে ভাড়া সমন্বয়ের অভাবে গণপরিবহণে অঘোষিত ধর্মঘট পালিত হয়েছে। সকাল থেকেই ঢাকার রাজপথ ছিল প্রায় ফাঁকা। বাসের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছে বিক্ষুব্ধ মানুষ। অনেক সময় পরপর দু-একটা বাস এলেও তাদের বেশির ভাগেই উঠতে পারেননি নারী, শিশু ও বয়স্ক যাত্রী। যারা উঠেছেন, তাদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়েছে। বেশি ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডাও হয় অনেক স্থানে। অফিসগামী যাত্রীদের হেঁটে গন্তব্যে যেতে হয়েছে। সকাল ও সন্ধ্যার দিকের যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। দেশের অনেক এলাকায় বাস রাস্তায় নামানোর জন্য পরিবহণ শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে জ্বালানি তেলে চলে না এমন পরিবহণেও চলাচলের সুযোগ ছিল না। কারণ সংকট টের পেয়ে তারাও কয়েক গুণ ভাড়া বাড়িয়েছে। ঢাকার শ্যামলীতে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত এক বিক্ষোভ থেকে পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সড়ক অবরোধের সময় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। সবমিলিয়ে এক হাঁসফাঁস অবস্থা তৈরি হয়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব নিয়ে আতঙ্কিত জনগণ।

শুক্রবার রাত থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি । ওই রাতেই জ্বালানি মন্ত্রণালয় তেলের দাম বৃদ্ধির খবর জানায়। নতুন দাম অনুযায়ী এক লিটার অকটেন, ১৩৫ টাকা, পেট্রোল ১৩০, ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা। চারটি পণ্যে আগের চেয়ে গড়ে ৪৭ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়। শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে এই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এই খবরে অর্থ সাশ্রয়ের আশায় অনেক মানুষ ছুটতে থাকেন তেলের পাম্পগুলোর দিকে। উদ্দেশ্য ১২টার আগেই পুরোনো দামে জ্বালানি তেল কেনা। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা ব্যর্থ হয়েছেন। মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা শুনে অধিকাংশ পাম্প মালিক জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ করে দেন। ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা গ্রাহকরা বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছেন। তারা অনেক রাত পর্যন্ত সড়কও অবরোধ করে রাখেন। তবুও তেল মেলেনি। শনিবার থেকে বর্ধিত মূল্যে তেল বিক্রি শুরু হলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে। তবে গণপরিবহণে ভাড়া বৃদ্ধি না করায় তারা অনেকটা অঘোষিত ধর্মঘট পালন করে। সড়কে সামান্য কিছু পরিবহণ চলছিল। তাদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের দফায় দফায় গণ্ডগোল হতে দেখা গেছে।

পরিবহণ সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী যাত্রীরা। শনিবার অনেকেই সঠিক সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছতে পারেননি। অনেকে এক পরিবহণের রাস্তা, কয়েকটি পরিবহণে ভেঙে ভেঙে পৌঁছেছেন। দিয়েছেন অতিরিক্ত ভাড়া। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়কে বাসের সংখ্যা কিছুটা বাড়তে থাকে। তখন ভোগান্তি তুলনামূলকভাবে কমে আসে। তবে বিকালের দিকে ফের পরিবহণ সংকট দেখা যায়। বাসচালক ও হেলপারদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা যদি বাড়তি ভাড়া না নেন তাহলে ভর্তুকি দিয়ে গাড়ি চালাতে হবে। সেজন্যই অতিরিক্ত ভাড়া নিতে বাধ্য হচ্ছেন। আর বাড়তি ভাড়া আদায় করতে গিয়েই যাত্রীদের সঙ্গে তাদের বাগ্বিতণ্ডা হচ্ছে। তবে বিপরীত চিত্রও দেখা গেছে কয়েকটি পরিবহণে। বাস ভাড়া বৃদ্ধির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসায় আগের ভাড়াই নিয়েছেন তারা।

এদিকে রাজধানীতে তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে মিছিল থেকে হঠাৎ আক্রমণ করে পুলিশের খালি গাড়ি ভাঙচুর করেছে বিক্ষোভকারীরা। শনিবার দুপুরে শ্যামলী শিশুমেলার সামনে এই ঘটনা ঘটে। জানতে চাইলে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘মিছিলের সামনে কোনো ব্যানার ছিল না। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ করেছে। সেই বিক্ষোভ থেকেই গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়েছে।’ এর আগে আশুলিয়ায় জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের চেষ্টাকালে তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার সকালে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের আশুলিয়ার শিমুলতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক তিনজন হলেন বিপ্লব (৩০), রাসেল (৩০) ও আলীরেজা (২৫)। তারা বিভিন্ন পরিবহণের চালক ও হেলপার বলে জানা গেছে।

শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার পরপরই রাজধানীর পেট্রোল পাম্পগুলোয় ডিজেল, অকটেন ও পেট্রোলচালিত যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। বাসগুলো যাত্রী পরিবহণ না করে তেলের জন্য বিভিন্ন পাম্পে ভিড় করে। এতে রাত থেকেই নগরীতে পরিবহণ সংকট দেখা দেয়। শুক্রবার রাতে কালশী রোডের একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে বাস, প্রাইভেট কার এবং মোটরসাইকেলের জটলা রাস্তা পর্যন্ত গড়ায়। ফলে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ রোডে তীব্র যানজট দেখা যায়। মিরপুর-২ নম্বর ও টেকনিক্যাল, মাজার রোড এবং গাবতলী এলাকায় পেট্রোল পাম্পের সামনে দেখা গেছে গাড়ির দীর্ঘ লাইন। এদিকে পাম্পে তেল না পেয়ে গাবতলী মাজার রোড এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে ক্ষুব্ধ বাইকাররা। এতে আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়। ফলে হেমায়েতপুরগামী পরিবহণকে গন্তব্যে পৌঁছতে ভিন্ন রাস্তা ব্যবহার করতে হয়েছে। ‘রাজধানী পরিবহণ’-এর একটি বাসকে টেকনিক্যাল থেকে ঘুরিয়ে মিরপুর এক নম্বর, দিয়াবাড়ী, বেড়িবাঁধ, পর্বত এলাকা হয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে দেখা গেছে। তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় এই পরিবহণের সুপারভাইজার মো. নাজিম যুগান্তরকে বলেন, কাল (শনিবার) থেকে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত গাড়ি বের করব না। মালিক বললেও আমরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামব না। সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে যাত্রীদের কাছে বাড়তি ভাড়া চাইলে মারামারি করতে হবে।

অন্যদিকে শনিবার সন্ধ্যায় গণপরিবহণ না পেয়ে কেউ কেউ রিকশা ও অটোরিকশায় করে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। আবার কেউ পৌঁছেছেন হেঁটে। পরিবহণ সংকটে চরম বিপাকে পড়েন অফিসগামী মানুষ। আমিনবাজারের বাসিন্দা আজাদ রহমান গাবতলী পর্যন্ত পৌঁছেছেন হেঁটে। এরপর সেখান থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে কর্মস্থল পল্টনে পৌঁছতে তাকে গুনতে হয়েছে ৪৫০ টাকা। অথচ অন্যদিন এই দূরত্বের জন্য সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা ভাড়া দেন তিনি। এই যাত্রী  বলেন, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এক ঘণ্টা বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে হাঁটতে শুরু করি। গাবতলী এসেও কোনো বাস না পেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিকল্প বাহনে অফিসে যেতে হয়। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন বাস ভাড়া বাড়বে। দ্রব্যমূল্য বাড়বে। কিন্তু আয় তো বাড়ছে না। আমরা বাঁচব কীভাবে? জীবন চলবে কীভাবে? কোনো কিছুরই উত্তর খুঁজে পাচ্ছি না।

রাজধানীর গাবতলী থেকে সাভারের হেমায়েতপুরের বাস ভাড়া ১৫ টাকা। অথচ শনিবার এই দূরত্বের জন্য ‘সাভার পরিবহণে’ ভাড়া গুনতে হয়েছে ৪০ টাকা। আর হেমায়েতপুর থেকে রাজধানীর কলাবাগানের বাস ভাড়া ৩০ টাকা। সেখানে শনিবার দ্বিগুণ ৬০ টাকা ভাড়া আদায় করেছে বাসগুলো। মিরপুর এক নম্বরে অছিম পরিবহণের একটি বাসে যাত্রীদের সঙ্গে বাড়তি ভাড়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা দেখা গেছে। যাত্রীদের অভিযোগ, প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করছে বাসের সুপারভাইজার। এই বাসের যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, গাবতলী থেকে কুড়িল পর্যন্ত সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ভাড়া ৩৫ টাকা। কিন্তু তারা তা না মেনে ৪০ টাকা আদায় করত। এখন তেলের দাম বাড়ায় ৬০ টাকা দাবি করছে। এ সময় বাসের সুপারভাইজার বলেন, এই কারণেই মালিক রাস্তায় গাড়ি নামাতে নিষেধ করেছে। গাড়ি নামিয়ে আমরাও বিপদে পড়েছি। ভর্তুকি দিয়ে তো আর গাড়ি চালানো যাবে না।

এদিকে পরিবহণ সংকটের কারণে নগরীর বিভিন্ন সড়কে প্রচুর ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দেখা গেছে। এসব রিকশায় ভাড়াও আদায় করা হয়েছে ইচ্ছা মতো। মিরপুর-২ নম্বর থেকে শেওড়াপাড়ার উদ্দেশে ব্যাটারির রিকশায় উঠেন আহসান কবির। তিনি জানান, গন্তব্যে পৌঁছাতে তাকে ভাড়া গুনতে হয়েছে ১৬০ টাকা। রিকশাচালক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘সব সময় তো কমেই যাই। আর ভাড়াও তো প্রতিদিন একরকম পাওয়া যায় না। আজ যাত্রী বেশি, তাই ভাড়াও কিছুটা বেশি নিচ্ছি।’

যুগান্তরের ডেমরা (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে রাজধানীর ডেমরায় ৯০ শতাংশ যাত্রীবাহী যানবাহন রাস্তায় নামেনি। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। বিকল্প যানবাহন হিসাবে অনেকেই মোটরসাইকেল রাইড, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা এবং স্বল্প দূরত্বের যানবাহনের মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছতে দ্বিগুণ ভাড়া গুনেছেন।

সরেজমিন ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় দেখা যায়, সকাল থেকেই ডেমরা-যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা-রামপুরা সড়কসহ ডেমরা-শিমরাইল সড়কে যানবাহন চলাচল ছিল সামান্য। ডেমরার আসমানী, অছিম, রাজধানী ও স্বাধীন নামে চারটি বাস কোম্পানির বেশির ভাগ বাস কোম্পানিই কমসংখ্যক গাড়ি নামিয়েছে রাস্তায়। ফলে বিকল্প হিসাবে যাত্রীরা মোটরসাইকেল, লেগুনা ও সিএনজিচালিত আটোরিকশায় চলাচল করেছেন দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও অফিসগামী যাত্রীরা কোনোমতে গন্তব্যে যেতে পারলেও বেশি সমস্যায় পড়েছেন বয়স্ক ও গার্মেন্টকর্মীরা।

অছিম পরিবহণের পরিচালক মহিউদ্দিন বলেন, হঠাৎ তেলের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা চরম হতাশা ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। এমনিতেই পরিবহণ সেক্টর বর্তমানে বিতর্কিত অবস্থায় রয়েছে। এ মুহূর্তে ভাড়াও বাড়াতে পারিনি। সংশ্লিষ্ট মহলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাড়া বৃদ্ধি করে সড়কে বাস চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ডেমরা-যাত্রাবাড়ী সড়কে শাহিদা পারভিন নামে এক যাত্রী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে  বলেন, এমনিতেই ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে সাংসারিক খরচ জোগানো বেশ মুশকিল হয়ে পড়েছে। তার ওপর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে, যা আমাদের জন্য বিশাল ধাক্কা। এতে বাস ভাড়া বৃদ্ধিসহ সব জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। বিভিন্ন সেক্টরের সিন্ডিকেটগুলো আরও সক্রিয় হবে। সব মিলিয়ে আমরা জনগণই মরব।

এ বিষয়ে ডেমরা ট্রাফিক জোনের ট্রাফিক ইনস্পেকটর (টিআই) মো. জিয়া উদ্দিন খান যুগান্তরকে বলেন, শনিবার সকাল থেকেই ঢাকার প্রবেশদ্বার ডেমরায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল কম ছিল। এতে মানুষের দুর্ভোগ অনেকটা বেড়েছে। তবে পরিবহণ সেক্টরের মিটিং চলছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী যানবাহন চলাচলে কতটুকু শৃঙ্খলা বাজায় থাকে, সেটি এখন দেখার বিষয়।

যাত্রাবাড়ী (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে বাসস্ট্যান্ড থেকে আগের মতো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। পরিবহণ শ্রমিকরা বেকার সময় কাটাচ্ছেন। ট্রাক-পিকআপসহ পণ্যবাহী যানবাহনের ভাড়াও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে চাল, আটাসহ বিভিন্ন পণ্যের দামও বেড়ে গেছে।

সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা-কুমিল্লা-লাকসাম, ঢাকা-চাঁদপুর, ঢাকা-নরসিংদী-ভৈরব, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-বরিশাল, ঢাকা-ভাঙ্গাসহ বিভিন্ন রুটে বাস ভাড়া আগের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে পরিবহণের টিকিট ম্যানেজারের সঙ্গে বাস যাত্রীদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। সোনালী পরিবহণে যেখানে ঢাকা থেকে মাদারীপুরের ভাড়া ছিল ৩৫০, সেখানে ৫০ টাকা ভাড়া বৃদ্ধি করে ৪০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ঢাকা-মাওয়া সড়কে ইলিশ পরিবহণে আগের চেয়ে ২০ টাকা ভাড়া বাড়িয়ে ১১০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ঢাকা-নড়িয়া রুটে শরীয়তপুর পদ্মা ট্রাভেলসে ২৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে যাত্রাবাড়ী মাছের আড়ত সংলগ্ন পিকআপ স্ট্যান্ডে দেখা যায়, যেখানে একদিন আগেও চার হাজার টাকায় একটি পিকআপ ভাড়া নেওয়া যেত, তারা এখন ৫ হাজার টাকার নিচে যেতে চায় না। পিকআপচালক শামীম যুগান্তরকে বলেন, এমনিতেই যাত্রাবাড়ী এলাকায় পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন, সিটি টোলসহ বিভিন্ন চাঁদা দিয়ে গাড়ির মালিকের জমা দিতে হয়। ফলে ঘরে স্ত্রী-সন্তান, পরিবার-পরিজনের মুখে খাবার দিতে হিমশিম খাচ্ছি। এর মধ্যে লিটারে জ্বালানি তেলের মূল্য ৩৪ টাকা বৃদ্ধিতে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা অবস্থা। এখন আর এ পেশায় থাকা যাবে না। এ পেশায় থাকলে ছেলেমেয়ে, স্ত্রী পরিবারের লোকজনকে না খেয়ে মরতে হবে। চুরি করা ছাড়া কোনো উপায় দেখি না।

যাত্রাবাড়ী কলাপট্টি চালের আড়ত ঘুরে দেখা যায়, ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি চালে ১৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। শুক্রবার এসিআই-এর ৫০ কেজির এক বস্তা চাল ছিল ৩ হাজার ৩০০ টাকা। তেলের দাম বৃদ্ধির পর সেখানে ১২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

ঢাকা মহানগর সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাজী সেলিম সরোয়ার যুগান্তরকে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম যেহেতু বৃদ্ধি করা হয়েছে, বাসের ভাড়াও বৃদ্ধি করা হবে। আমরা বিআরটিএ-এর লোকজনের সঙ্গে বৈঠকের আগে ভাড়া বৃদ্ধি করিনি। তবে যারা এখন বর্ধিত ভাড়া নিচ্ছে তারা নিজস্ব মতামতেই নিচ্ছে। বর্ধিত ভাড়া না নিলে বর্ধিত তেলে বাসটি চলবে, সে খরচ তো বাসের যাত্রীদের কাছ থেকেই নিতে হবে। তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বাসযাত্রী কমে গেছে। যেখানে ৫-১০ মিনিট পর পর বাস ছেড়ে যেত, সেখানে শনিবার ৩০ মিনিটে একটি বাস ছেড়ে যাওয়ার পরও যাত্রী নেই। কারণ যাত্রীও কমে গেছে। এতে পরিবহণ শ্রমিকরা বেকার সময় কাটাচ্ছে।

ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বকুল খান বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধিতে বাসের ভাড়াও বাড়াতে হবে। তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে আলাপ ছাড়া বৃদ্ধি করা সঠিক হবে না।

ডিএমপির ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার গোবিন্দ চন্দ্র পাল যুগান্তরকে বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে বাস বাড়া নিয়ে যাত্রীদের কোনো অভিযোগ পাইনি।

আহৃত


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT