1. admin@banglarakash.com : admin :
August 24, 2025, 7:26 pm

হাসপাতাল থেকে উধাও ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’

বাংলার আকাশ ডট কম email:banglar.akash.sif@gmail.com
  • Update Time : Sunday, July 24, 2022,
  • 85 Time View
Spread the love

 

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণের ২৮ মাস পর বৃহস্পতিবার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এখনো গড়ে দৈনিক হাজারের মতো রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় সরকার সবখানে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ চালু করে। সংক্রমণ পরিস্থিতি তীব্র না হওয়ায় হাসপাতালগুলোতে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ উধাও হয়ে গেছে। কিন্তু করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন অবশ্যই দরকার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবকিছু শিথিল হলেও সবাইকে নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। হাসপাতালের মতো জনবহুল জায়গায় সব সময় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে। এছাড়া অসুস্থ ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (ইমিউনিটি সিস্টেম) কম থাকে। স্বাস্থ্যবিধিতে উদাসীনতা দেখা দিলে অদৃশ্য ভাইরাসটি আবার মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. বেলাল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ বাস্তবায়নে শুধু হাসপাতাল নয়, সব প্রতিষ্ঠানেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিটি সাপ্তাহিক বৈঠকে হাসপাতালের প্রধান, সিভিল সার্জন ও ইউএচএফপিওদের বার্তাগুলো বারবার দেওয়া হচ্ছে। সরকার ঈদের আগেও সারা দেশে বিষয়টি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছে। যারা হাসপাতালে সেবা নিতে আসেন তাদের মাস্ক পরিধানের পরামর্শ দেওয়া হয়। এটা চলমান রয়েছে। তবে চিকিৎসক-নার্সদের মধ্যে উদাসীনতা থাকলে আরও নজরদারি বাড়ানো হবে।

সরেজমিন রাজধানীর একাধিক হাসপাতালের কোভিড ও নন-কোভিড ওয়ার্ড ঘুরে মাস্কসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখা গেছে। বুধবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ২০৯নং কোভিড ইউনিটের কেবিন ওয়ার্ডগুলোতে রোগী ও স্বজন অনেককেই মাস্ক ছাড়া দেখা যায়। ডিউটিরত নার্স, ওয়ার্ডবয় ও আয়াদের মধ্যে অনেকের মাস্ক ছিল থুতনির নিচে। জানতে চাইলে তারা বলেন, গরমকালে মাস্ক পরে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এছাড়া সংক্রমণ পরিস্থিতিও তীব্র নয়। তাই এখন আর তেমন ভয় কাজ করে না।

একইদিন বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের সি ব্লকের দ্বিতীয় তলার ২১৭নং মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে কর্মরত ছয়জনের মধ্যে একজন ছাড়া বাকিদের মুখে মাস্ক ছিল না। নিচতলার জরুরি বিভাগের সামনে কাচে ঘেরা ছোট্ট রুমে ছয়জন স্টাফ গাদাগাদি করে বসে রোগী ভর্তিসংক্রান্ত কাজ করছিলেন। সেখানেও কারও মুখে মাস্ক বা সামাজিক দূরত্বের বালাই ছিল না।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) গিয়ে আরও করুণ অবস্থা দেখা যায়। বহির্বিভাগ থেকে শুরু করে জরুরি অস্ত্রোপচার কক্ষেও বেশ কয়েকজন রোগী, ব্রাদার ও ওটিবয় মাস্কবিহীন ছিলেন। একাধিক ওয়ার্ড ঘুরে সেখানে চিকিৎসক, নার্স ছাড়াও হাসপাতালে আসা রোগী ও স্বজনদের প্রায় ৮০ শতাংশের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি।

একইভাবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও জাতীয় নিউরো সায়েন্স হাসপাতাল ঘুরে একই চিত্র দেখা যায়। অনেকের কাছে মাস্ক থাকলেও তা থুতনির নিচে এবং ব্যাগ ও পকেটে থাকতে দেখা যায়। নিউরো সায়েন্সের বহির্বিভাগের টিকিট নিতে লাইনে দাঁড়ানো বেশ কয়েকজনের মুখে মাস্ক না থাকার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে অনেকে পকেট থেকে মাস্ক বের করে দেখান। একজন  বলেন, গরম লাগার কারণে পরেননি। চিকিৎসকের কক্ষে প্রবেশের আগে মাস্ক পরবেন বলেও তিনি জানান। দুজন আনসার সদস্য বলেন, আগে পরতেন। এখন পরিস্থিতি ভালো তাই পরা হয় না। এছাড়া হাসপাতাল থেকেও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতর ও চত্বর এলাকায় দেখা যায়-বেশিরভাগ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। রোগী, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে মাস্ক পরার বিষয়ে উদাসীনতা দেখা যায়। হাসপাতালের বহির্বিভাগ, নতুন ভবনে করোনা ইউনিটেও একই পরিস্থিতি দেখা যায়। করোনা টিকাদান কেন্দ্রেও কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকের মুখে মাস্ক ছিল না। করোনার টিকা নিয়ে আসা ফিরোজ হোসেন মাস্ক না পরে টিকা নিতে এসেছিলেন। টিকা নেওয়া শেষে জানতে চাইলে উচ্চৈঃস্বরে তিনি বলেন, করোনা এখন নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, কিছুই করতে পারবে না।

ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ  বলেন, করোনা থেকে বাঁচার একটাই পথ স্বাস্থ্যবিধি মানা ও টিকা নেওয়া। এ ক্ষেত্রে মাস্ককে ‘ফাস্ট ভ্যাকসিন’ বলা হয়। করোনাভাইরাস সাধারণত নাক ও মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। সঠিক নিয়মে মাস্ক পরলে ভাইরাসটি মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে না। শুধু করোনাই নয়, বায়ু দূষণের শীর্ষ শহর ঢাকায় মাস্ক ব্যবহারে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে বাঁচা সম্ভব। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নতুন নতুন ভাইরাসঘটিত রোগ দেখা দিচ্ছে, যা নাক-মুখ দিয়ে ঢোকে। ফলে মাস্ক পরা ও নিয়মিত হাত ধোয়ার ব্যাপারে হাসপাতালসহ সবখানে বাধ্যতামূলক করা উচিত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও নজরদারি বাড়াতে হবে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইডিসিআর) উপদেষ্টা ও রোগতত্ত্ববিদ ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, হাসপাতালগুলো থেকে করোনা সংক্রমণ বেশি ছড়ায়। কারণ সেখানে ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সেবায় স্বজন থেকে শুরু করে চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় অনেকেই সংস্পর্শে আসে। ফলে শুধু কোভিড ইউনিট নয় সব হাসপাতালে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। না হলে এক রোগের চিকিৎসা নিতে গিয়ে অন্য রোগে সংক্রামিত হবে। হাসপাতালে সংক্রমণ রোধে যত ব্যবস্থা আছে সব বাস্তবায়ন দরকার। এ জন্য প্রাথমিক সুরক্ষা হিসাবে মাস্ক ব্যবহারের বিকল্প নেই।

আহৃত

 


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT