বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অনেক সমস্যা দূর হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বৃহস্পতিবার সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি জানান, সম্প্রতি সংসদীয় কমিটির একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে তিন কংগ্রেস সদস্যসহ দেশটির বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন।
সফরে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫০ বছরের সম্পর্ক, র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের শ্রমিক ইস্যু ও আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এই সফরের আগে ও পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান বলে মুহম্মদ ফারুক খান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই ৩ সফর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এ ব্যাপারে ফারুক খান বলেন, আমরা বলেছি, বিএনপি নির্বাচনে এলে আমাদের নির্বাচন নিয়ে অনেক সমস্যা দূর হতে পারে। নির্বাচন সংবিধান মোতাবেক হবে। আমাদের সংবিধানের ভেতরে আলোচনার অনেক সুযোগও আছে। বিএনপি যদি বলে তারা নির্বাচনে যাবে তাহলে তো কথার কিছু নেই। কিন্তু তারা বলে নির্বাচনে যাবে না, প্রতিহত করবে। তখন তো আলোচনার কিছু থাকে না।
সফরে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) প্রধানের সঙ্গে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে ফারুক খান বলেন, তার সঙ্গে আমাদের নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে। আমরা বলেছি, পৃথিবীর অন্য সব গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেইভাবে হয় এবং হবে। তবে পৃথিবীর সবখানেই নির্বাচনে যে হেরে যায় সে বলে, সমস্যা হয়েছে। তোমার দেশ যুক্তরাষ্ট্রেও এটা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও মানেনি।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি আরও বলেন, আমরা বলেছি, বাংলাদেশে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় যখন সব দলই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচন নিয়ে তখনই প্রশ্ন ওঠে যখন বিএনপি বা তার সমমনা দলগুলো আসে না এবং না এসে যদি বলে নির্বাচনকে প্রতিহত করবই, তখনই গোলমাল হয়।
তিনি বলেন, আমরা আশা প্রকাশ করেছি, আগামী নির্বাচনে বিএনপি আসবে। নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো পর্যবেক্ষণ থাকলে বা নির্বাচন ব্যবস্থাকে উন্নত করা নিয়ে তাদের কোনো পরামর্শ থাকলে নির্বাচন কমিশনের কাছে যেতে পারে। তারপর ইসি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে—এই বিষয়গুলো তাদের দরকার।
তিনজন সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে উল্লেখ করে ফারুক খান বলেন, আমাদের ব্যাপারে তাদের যথেষ্ট আশাবাদী মনে হয়েছে। আমাদের সম্পর্ক ভালো চলছে। ভবিষ্যতে আরও ভালো চলবে।
এই তিনজনের বাইরেও দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক উপমন্ত্রী ডেনিয়েল লুসহ আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে কমিটির সভাপতি বলেন, আমাদের নির্বাচন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞা, শ্রমিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনার ফলাফল হয়তো পরে দেখা যাবে। তবে আমাদের মনে হয়েছে তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন।
বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দেওয়ার বিষয়েও কথা হয়েছে জানিয়ে ফারুক খান বলেন, তারা তিনজনেই একমত হয়েছেন যে, এ ব্যাপারে কাজ চলছে এবং কাজ অব্যাহত থাকবে।
কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, আবদুল মজিদ খান, হাবিবে মিল্লাত, নাহিম রাজ্জাক, নাবিল আহমেদ ও নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) অংশ নেন।
(আহৃত)