ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে খেলার মাঠ দখলের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করে নাসিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
মাঠ দখলের প্রতিবাদ করায় মামলার শিকার হয়েছে নাসিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক অরুণজ্যোতি ভট্টাচার্য ও মাঠ রক্ষা আন্দোলন কর্মী আক্তার মিয়াসহ ১৫ জন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ১০০ বছর আগে পূর্ণচন্দ্র ভট্টাচার্যের মালিকানাধীন প্রায় তিন একর জায়গা গোচারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন স্থানীয়রা। গত তিন দশক ধরে নাসিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জায়গাটিকে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। পূর্ণচন্দ্রের মৃত্যুর পর তার ছেলে প্রমোদ চন্দ্র ভট্টাচার্যের একই গ্রামের রঞ্জিত রায় চৌধুরী, প্রেমাংশু কুমার ও তপন রায় চৌধুরীর নামে বিএস খতিয়ানে নথিভুক্ত হয়। প্রেমাংশু ও রঞ্জিত জায়গাটির ২৪ শতক জায়গা স্থানীয় সৈয়দ নজরুল ইসলামের কাছে বিক্রি করে দেন। কিন্তু এলাকাবাসীর বাধার কারণে জায়গা দখল নিতে পারেননি তিনি। সম্প্রতি প্রেমাংশু কুমার ও রঞ্জিত ঠাকুর একই গ্রামের ইদন মিয়ার দুই মেয়ে ঝর্ণা আক্তার ও নুরুন্নাহারের কাছে ১৪ শতক জায়গা বিক্রি করেন। তার পর গত ৬ জুন থেকে ঘর নির্মাণ করে আসছেন তারা।
নাসিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়য়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কৃপা দেবনাথ ঋতু বলেন, দখলদাররা আমাদের খেলার মাঠটি দখল করে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী আপনি চাইলেই আমাদের খেলার মাঠটি ফিরে পেতে পারি। প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনার কাছে হাত জোর করে অনুরোধ করছি আমাদের খেলার মাঠটি বন্ধ হতে চলেছে। আপনি আমাদের পাশে দাঁড়ান।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিক্তা রানী বলেন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমাদের বিদ্যালয়ের নামে এই মাঠ পরিচিত। প্রায় তিন যুগ ধরে আমাদের বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জাতীয় ক্রীড়া অনুষ্ঠান ওই মাঠে করে আসছে। মাঠটি এলাকার কিছু প্রভাবশালী দখল করে বিক্রি করে দিয়েছে। এ মাঠ দখল হয়ে গেলে আমাদের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার আর কোনো জায়গা থাকবে না। আমাদের আকুল আবেদন— ছোট ছোট শিশুদের কথা চিন্তা করে প্রভাবশালীদের হাত থেকে মাঠটি মুক্ত করুন।
মামলার শিকার ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অরুণ জ্যোতি ভট্টাচার্য বলেন, নাসিরপুর গ্রামের যুবসমাজ তথা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একমাত্র বিনোদনের ভরসা এই খেলার মাঠটি। আমি মাঠের পক্ষে প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে মাঠ দখলকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে মামলা করেছে। আমি চাই মাঠটি দখল মুক্ত হোক।
এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মাঠে ঘর নির্মাণকারী ঝরনা ও নুরুন্নাহারকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। পরে তাদের ভাই কুরবান মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বোনেরা প্রেমাংশু দত্ত ও রঞ্জিত ঠাকুরের কাছ থেকে ১৪ শতক জায়গা কিনেছে। আমরা কেনা জায়গায় ঘর তুলছি। কারও জায়গা দখল করছি না।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোনাব্বর হোসেন বলেন, আমি নতুন এসেছি। মাঠ নিয়ে কোনো সমস্যার কথা আমি জানি না। বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(আহৃত)