নরসিংদী রেলস্টেশনে ‘বিতর্কিত পোশাক’ পরিধান করার অভিযোগে হেনস্তার শিকার হওয়া তরুণীর ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে।
সেই তরুণীকে হেনস্তার অভিযোগে আলোচিত নারীকে রোববার গভীর রাতে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ।
রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শিবপুর উপজেলার ইটাখোলা এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ওই নারীর নাম মার্জিয়া আক্তার ওরফে শিলা ওরফে সায়মা (৬০)। তিনি পেশায় একজন ঘটক ও শহরের উপজেলা মোড়ের একটি বাড়ির ভাড়াটিয়া ফয়েজ আহমেদের স্ত্রী।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ওই নারীকে শনাক্ত করে মামলার আসামি করা হয়।
র্যাব-১১ নরসিংদী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌহিদুল মবিন খান গণমাধ্যমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি নরসিংদী রেলস্টেশনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তরুণীকে হেনস্তা ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা হয়। সেই মামলায় গ্রেফতার নারীর বিষয়ে সোমবার ঢাকায় র্যাবের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
১৮ মে ঘটনার পর আসামি গ্রেফতারে দেরি হওয়ার বিষয়ে র্যাব কর্মকর্তারা জানান, গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে ওই নারী ঘন ঘন বাসা পরিবর্তন করেন। মোবাইল ফোন নম্বরও পরিবর্তন করেন তিনি। বারবার তার স্থান ও মোবাইল ফোন নম্বর পরিবর্তনের কারণে তাকে গ্রেফতারে সময় লেগেছে।
এর আগে এ ঘটনায় গ্রেফতার হন মো. ইসমাইল মিয়া (৩৫) নামে এক ব্যক্তি।
প্রসঙ্গত নরসিংদী রেলস্টেশনে বিতর্কিত পোশাক পরায় শ্লীলতাহানির শিকার হন এক তরুণী।
এ ঘটনার পক্ষে-বিপক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
রেলওয়ে পুলিশ জানায়, গত বুধবার সকালে নরসিংদী রেলস্টেশনের ১নং প্লাটফরমে ঢাকাগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন দুই তরুণ ও এক তরুণী। মেয়েটির পরনে ছিল জিন্স প্যান্ট ও টপস। তাই দেখে স্টেশনে অবস্থানরত এক নারী প্রথমে ওই তরুণীর দিকে তেড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের আরও কয়েকজন ব্যক্তি তার ওপর হামলার চেষ্টা চালায়।
ভুক্তভোগী ওই তরুণী দৌড়ে স্টেশনমাস্টারের কক্ষে আশ্রয় নিয়ে তাকে বাঁচানোর অনুরোধ করেন। পরে স্টেশনমাস্টারের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের ঢাকাগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় শনিবার রাত ১১টার দিকে নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইমায়েদুল জাহেদী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ও ৩০ ধারায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারে এক নারীসহ দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও এক নারী ও ১০ পুরুষকে আসামি করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওতে অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের আসামি করা হয়।
(আহৃত)