ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘আওয়ামী সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করেছে।
কাল রোববার এ কর্মসূচি পালিত হওয়ার কথা। কিন্তু দুই অংশই বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির ওরফে খোকনকে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রচার করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত দুই পক্ষের দুটি পোস্টারে প্রধান অতিথি হিসেবে ছবিসহ খায়রুল কবিরের নাম ছাপা হয়েছে। এ নিয়ে বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মনে প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির কোন দিকে যাবেন?
রোববার বেলা ১১টায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ওরফে ইছা ও সদস্যসচিব এ কে কিবরিয়ার নেতৃত্বাধীন অংশ ফরিদপুর কোর্ট চত্বর প্রাঙ্গণে সমাবেশের আয়োজন করেছে। ওই অনুষ্ঠানে তাঁরা দুজন যথাক্রমে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করবেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবিরকে প্রধান অতিথি করা হয়।
দুই যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান ওরফে পলাশ ও সৈয়দ জুলফিকার হোসেনের নেতৃত্বাধীন জেলা বিএনপির অপর অংশটি একই সময় (বেলা ১১টা) ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে সভা-সমাবেশের আয়োজন করেছে। ওই অনুষ্ঠানে ওই দুই নেতা সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করবেন বলে জানানো হয়েছে। তবে আফজাল হোসেন খান ও জুলফিকার হোসেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হলেও ওই পোস্টারে তাঁরা সেই পরিচিতি ব্যবহার করেননি। সেখানেও খায়রুল কবিরকে প্রধান অতিথি করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির পাঁচজন নেতা-কর্মী এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যখন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও সর্বোপরি আগামী নির্বাচন সামনে রেখে নির্দলীয় সরকারের আন্দোলন বেগবান করার কথা, তখন জেলা বিএনপির ১৯ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের এই শিশুসুলভ আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত। তাঁরা বলেন, এ ঘটনায় নেতৃত্বের কাঙালপনা, নেতাদের দেউলিয়াত্বই প্রকাশ পায়। যা দলের জন্য অমর্যাদাকর।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে কিবরিয়া বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন মনোনীত জেলা বিএনপির বৈধ কমিটির কর্মসূচিতেই যোগ দেবেন। আমরা দল ঘোষিত বৈধ কমিটি। তিনি ফরিদপুরে এলে কোর্ট চত্বরের অনুষ্ঠানেই যোগ দেবেন।’ তিনি বলেন, দলের অপর দুই নেতা কীভাবে এই উদ্যোগ নিলেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। তাঁরা ওই পোস্টারে দলীয় পদ পর্যন্ত ব্যবহার করেননি।
অপর অংশের নেতা জুলফিকার হোসেন বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিএনপির তৃণমূলের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান জানিয়ে ফরিদপুরে আসার পর কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবিরের উচিত হবে, দুই পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে দুই পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে একটি অভিন্ন সমাবেশ করা। তিনি যদি তা না করে এক পক্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দেন, তাহলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
দলীয় পদবি ব্যবহার না করার বিষয়ে জুলফিকার হোসেন বলেন, ‘গত ১৫ এপ্রিল যাঁকে আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে, আমরা তাঁদের মানি না। সে কারণে আমরা ওই কমিটি মানছি না। এ জন্য আহ্বায়ক কমিটির পদ পোস্টারে ব্যবহার করিনি।’
(আহৃত)