মানিকগঞ্জের ঘিওরে স্ত্রীর পর দুই মেয়েকেও নিজ হাতে গলাকেটে হত্যা করেন আসাদুজ্জামান রুবেল (৪০)। শনিবার দিবাগত রাত ৩টার পর বাবার হাতেই নিভে গেল দুই মেয়ের জীবন। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকারী রুবেল তার বড় মেয়ে ছোয়া আক্তারকে সবচেয়ে বেশি ভাল বাসতেন। ভাল পোশাক,ভাল খাবার প্রথমে তার হাতেই তুলে দিতেন। অভাব অনটনের সংসারেও কোন কিছুর অভাব তাকে পেতে দেয়নি। দন্ত চিকিৎসাও বড় মেয়েকে শেখাচ্ছিলেন। ছোয়া এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। বানিয়াজুরী সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক শাখার শিক্ষার্থী সে। লেখা পড়ায় বেশ ভাল ছিল বলে শিক্ষকরাও তাকে আদর করতেন। বাবা মায়ের ইচ্ছে ছিল মেয়ে লেখা পড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হবে। কিন্তু মেয়ের স্বপ্নকে নিজ হাতেই হত্যা করলো পাষণ্ড পিতা।
ছোট মেয়ে কথা আক্তার। বানিয়াজুরী ২৫ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সেও লেখা পড়ার বেশ ভাল ছিল বলে মা লাভলী বেগম তাকে বেশী আদর করতেন। চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে কথা আক্তার তার হাসি মাখা কথায় আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীকে মাতিয়ে রাখতো। কিন্তু কথাকেও পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হলো তার বাবার হাতেই।
স্থানীয় বালিয়াখোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল খান বলেন, রুবেল অনেক টাকা ঋণ গ্রস্ত হয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। যার দরুন এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি ধারণা করেন।
ঘিওর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খালিদ মনসুর জানান, ট্রিপল নিহত লাভলী আক্তারের বাবা সাইজুদ্দিন বাদী হয়ে মেয়ের জামাই আসাদুজ্জামান রুবেলকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতার আসাদুজ্জামান রুবেল আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ঘিওর থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানায়, উপজেলার আঙ্গারপাড়া গ্রামের আব্দুল বারেক এর ছেলে আসাদুর রহমান রুবেল (৪০) রোববার ভোর রাতের কোনো এক সময় তার স্ত্রী ও দুই মেয়েকে পারিবারিক কলহের জের ধরে গলাকেটে হত্যা করেন। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মাসহ দুই মেয়েকে হত্যার বিষয়ে নিয়ে শিবালয় সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবনী সাংবাদিকদের জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
(আহৃত)