1. admin@banglarakash.com : admin :
August 24, 2025, 6:41 am

একের পর এক ভুল চিকিৎসা ফরিদপুরে, চোখ হারিয়ে ব্রেইন ক্যান্সারে আক্রান্ত শাহিনুর

তথ্য সংগ্রহেঃ মোঃ ইকবাল হোসেন শুভ email:banglar.akash.sif@gmail.com
  • Update Time : Sunday, April 17, 2022,
  • 227 Time View
Spread the love

শাহিনুরের জীবন ছিল ৮-১০ জনের মতো সুস্থ-স্বাভাবিক। স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ভালোই কাটছিলো দিনগুলো।হঠাৎ বছর তিনেক আগে বাম চোখ দিয়ে ঝরতে থাকে পানি। দ্বারস্থ হন চক্ষু চিকিৎসকের। বাণিজ্যের নামে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় চোখ হারিয়ে ব্রেইন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জীবন শঙ্কায় দিন কাটছে তার।

ফরিদপুর আনোয়ার-হামিদা চক্ষু হাসপাতাল থেকে শুরু করে বাংলাদেশ আই হসপিটাল, শেষ হয় বাংলাদেশ জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালে। কিন্তু এখন তাকে বাঁচাতে প্রয়োজন অর্থ। এতোদিন বিভিন্ন হাসপাতাল ও ডাক্তারদের দ্বারস্থ হয়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন তিনি।

শাহিনুর বেগম (৪০) ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর এলাকার মির্জা গালিবের স্ত্রী। চোখে পানি পড়া নিয়ে ২০১৮ সালের ১২ মে ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর এলাকায় অবস্থিত আনোয়ারা-হামিদা চক্ষু হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও কনসালটেন্ট ডা. মো. মোহসিন বেগের দ্বারস্থ হন। সঠিক রোগ নির্ণয় না করে বার বার অপারেশন ও ভুল চিকিৎসায় তার জীবনে দুর্বিষহ নেমে এসেছে বলে অভিযোগ শাহিনুরের।

শনিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে শাহিনুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে একটি জরাজীর্ণ ঘরে তাদের বসবাস। পৌঁছানো মাত্র টের পেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসেন তিনি। চোখে কালো চশমা, চশমা খুলতেই দেখা যায় করুণ অবস্থা। কপাল থেকে চামড়া কেটে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে বাম চোখের ওপর। এ সময় তিনি বের করে দেখান প্রতিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র ও ছাড়পত্র।

শাহিনুর বেগম  বলেন, প্রায় তিন বছর আগে আমার বাম চোখে পানি পড়তে শুরু করে। এরপর আমি বাড়ির পাশে ডা. মো. মোহসিন বেগকে দেখাই। তিনি দেখে ওষুধ লিখে দেন। দুই মাস পরেও পানি পড়া না কমলে তিনি একই হাসপাতালের ডা. মো. আজমের কাছে রেফার করেন। তখন তিনি বলেন, আমার বাম চোখের নেত্রনালীতে সমস্যা হয়েছে এবং জানান চোখের অপারেশন ছাড়া ওষুধ দিয়ে কাজ হবে না।

আনোয়ারা হামিদ চক্ষু হাসপাতাল

এরপর ২০১৮ সালের ২০ জুলাই তারিখে ডা. মোহসিন বেগ ও ডা. আজম আমার চোখের অপারেশন করেন। এরপর থেকে আমার চোখ ফুলে ওঠে এবং কিছু সমস্যা অনুভব করতে থাকি। আবারও ডা. মোহসিন বেগের কাছে গিয়ে বললে আমাকে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করেন।

এরপরও চোখের সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আমাকে বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতালের ডাক্তার মো. আজিজুর রহমানকে এনে দ্বিতীয়বারের মতো ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি নেত্রনালীর অপারেশন করেন। এ সময় আমার চোখের নিচে নাকের হাড় কেটে ফেলি। এরপর থেকে আরও খারাপ অবস্থা হতে থাকে। তারপরও দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে অবস্থার উন্নতি না হলে আমাকে বাংলাদেশ আই হসপিটালের প্রফেসর ডা. গোলাম হালদারের কাছে রেফার করেন। তিনি পরীক্ষা করে জানান, নেত্রনালীর কোনো সমস্যা হয়নি, চোখের ভেতরে টিউমার হয়েছে। এতো যা হয়েছে তা সঠিক রোগ নির্ণয় না করে চিকিৎসা দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, আমার নাকের হাড় কেটে ফেলায় সেখানে ইনফেকশন হয়। এরপর আমি পরীক্ষা করে জানতে পারি সেখানে ক্যান্সার হয়েছে। এরপর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি হলে উক্ত হাসপাতালের ডাক্তার আমার চোখের টিউমারের অপারেশন করেন।

এরপর চোখের ইনফেকশন দূর করার জন্য ২০২১ সালের ০৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় নাক, কান, গলা ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকেরা আমার চোখ তুলে ফেলেন। বর্তমানে আমার ব্রেইনে ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছে। আমার চিকিৎসার জন্য প্রচুর টাকা প্রয়োজন। এই নারী অভিযোগ করেন, ডাক্তার মোহসিন বেগের ভুল চিকিৎসায় আমার সব শেষ হয়ে গেছে। মৃত্যুর জন্য আমার দিন গুনতে হচ্ছে। আমার চিকিৎসার জন্য আমার ছেলের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে। ছেলে-মেয়ে দুটো ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তায় আছি।

শাহিনুরের স্বামী  মির্জা গালিব বলেন, আমার স্ত্রীর যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। তারপরও আমি ডাক্তার মোহসিন বেগের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানিয়ে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য কিছু আর্থিক সহযোগিতাও চাইলে আমাদের বের করে দেন। এই ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার জন্য আমার  স্ত্রীর জীবন আজ মৃত্যুর পথে। অর্থের অভাবে হয়তো তাকে আমি বাঁচাতে পারবো না।

এ বিষয়ে আনোয়ারা-হামিদা চক্ষু হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কনসালটেন্ট ডাক্তার মোহসিন বেগের কাছে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

 

(আহৃত)


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT