সাত সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ ইউক্রেন ২৩ হাজারের বেশি সেনা হারিয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন।
তার দাবি, যুদ্ধকালে ইউক্রেনের ১০০টির বেশি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার এবং দুই হাজার ২০০টির বেশি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে রাশিয়া।
রাশিয়ার সামরিক অভিযানে ইউক্রেনের সেনা, ন্যাশনাল গার্ড ও বাইরের দেশ থেকে আনা যোদ্ধাদের ক্ষতির হিসাব রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংগ্রহে রয়েছে। কিন্তু জেলেনেস্কি নিজ দেশের নাগরিকদের সামনে এ তথ্য প্রকাশে ভীত।
সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে কোনাশেনকভ জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া রুশ সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সেনাদের ছয়টি লক্ষ্যবস্তু, ১৩২টি যুদ্ধবিমান, ১০৫টি হেলিকপ্টার, ২৪৫টি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ৪৫৭টি ড্রোন ধ্বংস করেছে রাশিয়া।
এসময়ে ইউক্রেনের ২ হাজার ২২৪টি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান, ২৫১টি মাল্টি–ব্যারেল রকেট লঞ্চার, ৯৭১টি কামান ও মর্টার এবং ২ হাজার ১২৩টির মতো সামরিক যান ধ্বংসের দাবি করেন রুশ মুখপাত্র।
ইগর কোনাশেনকভের এসব তথ্য তুলে ধরার একদিন আগেই মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জেলেনেস্কি জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার সেনা অভিযানে তার দেশের এ পর্যন্ত আড়াই থেকে তিন হাজার সেনা নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আহত হয়েছে হাজারখানেক সেনা। তবে আহতদের মধ্যে সেরে ওঠেছেন কতজন সে তথ্য জানাননি তিনি।
কিন্তু জেলেনেস্কির এসব তথ্য ‘মিথ্যা’ দাবি করে কোনাশেনকভ জানান, রাশিয়ার চলমান সামরিক অভিযানে মারিউপোল শহরটিতেই চার হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধে ইউক্রেনের এ পর্যন্ত ২৩ হাজার ৩৬৭ জন সেনা নিহত হয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দাবি, চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার এ পর্যন্ত ১৯ থেকে ২০ হাজার সেনা নিহত হয়েছেন। যদিও রাশিয়ার পক্ষ থেকে এ সংখ্যা এক হাজার ৩৫১ জন বলা হচ্ছে।
জাতিসংঘের ধারণা, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে এ পর্যন্ত ইউক্রেনে কমপক্ষে এক হাজার ৯৮২ বেসামরিক লোক প্রাণ হারিয়েছেন। তবে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। আহতের সংখ্যা দুই হাজার ৬৫১ জন। দেশটি থেকে এ পর্যন্ত ৪৬ লাখের মতো পালিয়েছেন। নিজ দেশে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৭০ লাখের মতো।