পাকিস্তানে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কর্মী-সমর্থকেরা। উত্তর ভার্জিনিয়ার ব্রুকফিল্ড প্লাজার বাইরে ইমরানের পক্ষে এ বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিয়ে বলতে থাকেন, ইমরান আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবেন। গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রী পদ হারিয়েছেন ইমরান খান। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছেন ইমরান ও তাঁর দলের নেতারা। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুর না মেলানোয় ওয়াশিংটন ইমরানের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে সরানোর ষড়যন্ত্র করেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
ভার্জিনিয়ার ওই বিক্ষোভে সমবেতরা ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে স্লোগান দেন। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা এক সাংবাদিক বিক্ষোভকারীদের কাছে জানতে চান, ‘কী অগ্রহণযোগ্য?’। জবাবে তাঁদের একজন বলেন, হঠাৎ এই পরিবর্তন অগ্রহণযোগ্য। এর মাধ্যমে পাকিস্তান আবারও দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির দেশে পরিণত হবে।
পিটিআই সমর্থকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। কিন্তু তাঁদের অবস্থা দেখা মনে হচ্ছিল নিজেদের করণীয় সম্পর্কে তাঁরা কিছুই বলতে পারছেন না। এ ছাড়া তাঁদের কাছে কোনো পোস্টার, ব্যানার কিংবা প্ল্যাকার্ড ছিল না। শুধু তাদের চেহারায় রাগ আর হতাশার চিত্র ফুটে উঠেছিল।
বিক্ষোভের শুরুতেই সেখানে আসেন পিটিআই সমর্থক ও স্থানীয় দোকানি খালিদ তানভীর। তিনি বলেন, ইমরানকে সরাতে সুপ্রিম কোর্ট ভুল পদক্ষেপ নিয়েছেন। শুধু তা–ই নয়, ইমরানের বিরুদ্ধে কাজ করা বিরোধী জোটও ভুল করেছে।
স্থানীয় পিটিআইয়ের প্রধান জনি বশির বলেন, নব উদ্যমে, আরও গোছানো নতুন টিম নিয়ে ইমরান আবারও ক্ষমতায় ফিরবেন সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যে দলে কোনো ভিতু কিংবা পিছু হঠা কোনো ব্যক্তি থাকবে না।
তাঁর এই বক্তব্যের পেছনে যুক্তি আছে। কারণ, পাকিস্তানি-আমেরিকানদের মধ্যে ইমরান খান খুবই জনপ্রিয়। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ইমরান যখন প্রথম র্যালি করেছিলেন, সে সময় বিপুল জনসমাগম ঘটেছিল। তার আগে সেখানে পাকিস্তানের কোনো নেতার সভা–সমাবেশে এত মানুষ হয়নি।ওই র্যালিতে অংশ নেওয়া সমর্থকেরা পিটিআইয়ের কোনো অনুদান প্রয়োজন হলে তহবিল জোগানে এগিয়ে আসেন। এসব কারণে জনপ্রিয় নেতার এমন অনাকাঙ্ক্ষিত বিদায় তাঁদের বেশ কষ্ট দিয়েছে।
ক্ষমতা থেকে সরাতে ইমরান ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রের’ যে অভিযোগে করেছেন, সেই বিষয়ে বিক্ষোভকারীদের বেশ সতর্ক দেখা গেছে। ইমরানের এই পরিস্থিতির জন্য তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রকে দোষ দেননি।