এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণ ও মোবাইল ফোনে তা ভিডিও করার অভিযোগে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে তিন বখাটেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (৯ এপ্রিল) রাতে উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর এলাকায় এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের চকচকা তেলিপাড়া গ্রামের মো. আলমগীর হোসেনের ছেলে সোহাগ (২১), হাজির মোড় গ্রামের বেনজু মিয়ার ছেলে আসিফ (১৯) ও মৃত এমদাদুল হকের ছেলে সাগর ইসলাম (২২)।
রোববার (১০ এপ্রিল) দুপুরে আসামিদের দিনাজপুর আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে শনিবার মধ্যরাতে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাত ৮টার দিকে ওই কিশোরীকে বাড়ি থেকে কৌশলে ডেকে এনে শিবনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর এলাকার একটি স্কুলের পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে আসিফ। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তারই সহপাঠী সাগর ইসলাম, আর তাকে সহযোগিতা করে সোহাগ।
পরে সাগর ও সোহাগ ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে বললে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারসহ ওই কিশোরীকে হত্যার হুমকি দেয়। এদিকে অনেক খোঁজা খুঁজির পর এক প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে মেয়েকে উদ্ধার করেনতারবাবা।
ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর কাছে ঘটনার বিস্তারিত শুনে ওই রাতেই শিবনগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য নুরু ইসলামকে বিষয়টি জানায় পরিবারের সদস্যরা। এ সময় ইউপি সদস্য গ্রামের লোকজন নিয়ে কৌশলে ওই তিন যুবককে আটক করে থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌঁছে তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে এবং ওই তরুণীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য নুর ইসলাম নুরু বলেন, খবর পেয়ে ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে তার মুখে ঘটনার বর্ণনা শুনে কৌশলে গ্রামের লোকজনকে নিয়ে অভিযুক্ত তিন যুবককে আটক করি। পরে তারা ধর্ষণ ও মোবাইলে ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করলে পুলিশে খবর দেই।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, ভিকটিমকে চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং আসামিদের কাছ থেকে ভিডিও চিত্র উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করেছে। এঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(৩) ধারায় ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা (মামলা নম্বর-০৬, তারিখ ১০/০৪/২০২২-ইং) করেছেন। রোববার দুপুরে আসামিদের দিনাজপুর আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।