বড় দুই বোনের সঙ্গে শুকনা পাতা কুড়াতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন রুনা আক্তার। ২৫–২৬ বছর আগের কথা। রুনার বয়স ছিল ৫–৬ বছর। বর্তমান বয়স ৩০ বছরের বেশি। বাসার উঠান থেকে একটি লাল ভবন দেখা যেত, উঠানে ছিল একটি পেয়ারাগাছ, গাঢ় বাদামি রঙের রেডিওতে বাবা গান শুনতেন, বাবা ছিলেন লম্বা-ফরসা-চিকন আর তাঁর মুখটা দেখতে মায়ের মতো—এমন কিছু স্মৃতি সম্বল করে হারিয়ে ফেলা পরিবারের খোঁজ করেছেন রুনা আক্তার।
মা–বাবা, ভাই–বোনদের সঙ্গে আর কখনো দেখা হবে—এমন আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। তবে এখন তাঁর মুখে চওড়া হাসি। দুই যুগের বেশি সময় পর এ মাসে তিনি খুঁজে পেয়েছেন নিজের পরিবারকে। আর পরিবার ফিরে পাওয়ার পরই জানতে পারলেন তাঁর নাম ছিল ‘সূর্যবানু’।
রুনা আক্তার ওরফে সূর্যবানু কাজ করেন জর্ডানে। এ মাসের শেষের দিকে তাঁর ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। প্রথম আলোকে বলেন, ‘মনে অনেক আনন্দ, অনেক সুখ নিয়ে এবার কাজে ফিরে যাচ্ছি।’ জানালেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্মের একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি পরিবারকে ফিরে পেয়েছেন। নিশ্চিত হওয়ার পর বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘এটাই আমার বাবা, এটাই আমার বাবা।’
রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকায় টিনশেডের ভাড়া বাসায় রিকশাচালক স্বামী মো. মিন্টু মিয়া, স্কুলপড়ুয়া ১০ বছরের মেয়ে মদিনা এবং বৃদ্ধ শাশুড়িকে নিয়ে বাস করেন সূর্যবানু। সেই ভাড়া কক্ষে বসে আনন্দে ভাসতে থাকা সূর্যবানুর সঙ্গে কথা হলো প্রথম আলোর।