1. admin@banglarakash.com : admin :
August 24, 2025, 3:58 am

টাকার অবমূল্যায়নে মূল্যস্ফীতি

বাংলার আকাশ ডট কম email:banglar.akash.sif@gmail.com
  • Update Time : Sunday, May 29, 2022,
  • 94 Time View
Spread the love

বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে ডলারের চাহিদা বাড়ছে, সরবরাহ কমছে। এতে ডলার সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ডলার সংকটের কারণে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় এর দাম বেড়েই চলেছে।

আজ রোববার থেকে ডলারের দাম আরও ১ টাকা ৯৫ পয়সা বাড়বে। ফলে আমদানির দায় মেটানোর জন্য প্রতি ডলার গ্রাহকদের কিনতে হবে ৮৯ টাকা ৯৫ পয়সা দরে। সব ব্যাংক এই দরেই ডলার কেনাবেচা করবে। তবে নগদ ডলারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংক ভিন্ন ভিন্ন দরে কেনাবেচা করতে পারবে।

এদিকে ডলারের দাম বাড়িয়ে টাকার লাগামহীন অবমূল্যায়নের ফলে আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ডলারের দাম বৃদ্ধিতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় পণ্যের দাম বাড়ছে। টাকার মান কমানোর ফলে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়ছে। চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে।

সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) বৈঠক হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয় বাফেদা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে ডলারের অভিন্ন দর নির্ধারণ করবে। সেই দর বাংলাদেশ ব্যাংককে রোববার সকালে জানাবে। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকেও জানিয়ে দেবে। ওই দরেই সব ব্যাংক ডলার কেনাবেচা করবে। ওই সিন্ধান্তের আলোকে বাফেদা শনিবারই ডলারের নতুন দর নির্ধারণ করেছে।

এতে আন্তঃব্যাংকে আজ রোববার থেকে প্রতি ডলার বেচাকেনা হবে ৮৯ টাকা ৮৫ পয়সা দরে। আমদানি বা অন্য প্রয়োজনে ব্যাংকগুলো গ্রাহকের কাছে ডলার বিক্রি করবে আন্তঃব্যাংকের চেয়ে ১০ পয়সা বেশি দামে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৮৯ টাকা ৯৫ পয়সা দরে। বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে রেমিট্যান্স বাবদ ব্যাংকগুলো ডলার কিনবে আন্তঃব্যাংকের চেয়ে ১৫ পয়সা কম দামে। অর্থাৎ ৮৯ টাকা ৮০ পয়সা দরে। ব্যাংকগুলো রপ্তানি বিল কিনবে আন্তঃব্যাংকের চেয়ে এক টাকা কম দামে অর্থাৎ ৮৮ টাকা ৯৫ পয়সা দরে।

নতুন এই দর কার্যকর হলে প্রতি ডলারের দাম বাড়বে এক টাকা ৯৫ পয়সা। তবে নগদ ডলারের দাম আরও বেশি বাড়তে পারে। কেননা এ খাতে কোনো বিধিনিষেধ নেই। এদিকে নগদ ডলারের সংকটও প্রকট। গত বৃহস্পতিবার আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলার লেনদেন হয়েছে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা দরে। গ্রাহকদের কাছে ব্যাংকগুলো বিক্রি করেছে ৮৮ টাকা দরে। অন্যান্য খাতে একেক ব্যাংক একেক দরে ডলার বিক্রি করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের বিপরীতে টাকার মান নিরূপণের জন্য বিভিন্ন দেশের মুদ্রার সমন্বয়ে একটি ঝুড়ি তৈরি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন ডলার, যুক্তরাজ্যে পাউন্ড, ইউরোপীয় অঞ্চলের একক মুদ্রা ইউরো, ভারতের মুদ্রা রুপি, সৌদি আরবের মুদ্রা রিয়াল, চীনা মুদ্রা ইউয়ান প্রভৃতি। ওইসব মুদ্রার মান বিশ্লেষণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকার মান নির্ধারণ করে দুইভাবে। একটি হচ্ছে নমিনাল এক্সচেঞ্জ রেট বা সাধারণ বিনিময় হার, অপরটি হচ্ছে রিয়াল এক্সচেঞ্জ রেট বা প্রকৃত বিনিময় হার। তবে এই দুটি হারই বর্তমানে বাজারের ওপর প্রয়োগ করা হয় না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ডলার ছেড়ে বা কিনে টাকার মান নিয়ন্ত্রণ করে।

তবে ওই দুই হিসাবেই ডলারের দাম আরও বেশি। ডলারের বাজারে নমিনাল বিনিময় হার ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯৫ টাকা ৬৩ পয়সা। গত মার্চে তা বেড়ে ৯৬ টাকা ৮৭ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। এদিকে গত ফেরুয়ারিতে প্রকৃত বিনিময় হার ছিল ১১৪ টাকা ৬৪ পয়সা। গত মার্চে তা বেড়ে ১১৫ টাকা ৬৫ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ডলারের দাম আরও বেশি বাড়ার কথা এবং টাকার আরও বেশি অবমূল্যায়ন হওয়ার কথা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের ওই দর নিজেদের গবেষণার জন্য বের করে। এর মাধ্যমে তারা অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি প্রকৃতি সম্পর্কে একটি ধারণা নেয়। এর আলোকে নীতি প্রণয়ন করে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যেমন কমছে, তেমনি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা মুদ্রার মজুদও কমছে। গত অক্টোবরে রিজার্ভ চার হাজার ৭০০ কোটি ডলারে উঠেছিল। এখন তা কমে চার হাজার ২৩০ কোটি ডলার হয়েছে। গত বছরের মার্চে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ছিল ৫২৯ কোটি ডলার। গত মার্চে তা ৪৯৯ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।

চলতি অর্থবছরের জুলাই মার্চ সময়ে আমদানি বেড়েছে ৪৪ শতাংশ এবং এলসি খোলা বেড়েছে ৫০ শতাংশ। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে এলসি খোলা আরও বাড়বে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে। এপ্রিল জুনে এলসি খোলা হতে পারে এক হাজার ৭২৫ কোটি ডলারের। এর মধ্যে রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য ব্যাক টু ব্যাক এলসি হতে পারে ২৯০ কোটি ডলার।

বর্তমানে প্রতি মাসে আমদানি ব্যয়, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ, ভ্রমণ ও চিকিৎসা খাত মিলিয়ে গড়ে ৯৫০ কোটি থেকে এক হাজার কোটি ডলারের প্রয়োজন হয়। এর বিপরীতে রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স, বিনিয়োগ মিলিয়ে ৭৪০ থেকে ৭৫০ কোটি ডলার পাওয়া যায়। প্রতি মাসে ঘাটতি থাকে ২১০ কোটি থেকে ২৫০ কোটি ডলার। মাসে গড় ঘাটতি দাঁড়ায় ২৩০ কোটি ডলার। এটা এখন রিজার্ভ থেকে মেটানো হয়।

চলতি বছরের পাঁচ মাসে এখন পর্যন্ত ছয় দফা টাকার অবমূল্যায়ন করা হয়েছে দুই টাকা ১০ পয়সা। আজ আরও এক টাকা ৯৫ পয়সা করা হচ্ছে।

এর আগে ব্যাংকে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ৯৬ টাকায় উঠেছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপে তা নেমে এসেছে। এদিকে কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে ডলারের দাম ১০৪ টাকায় উঠেছিল। এটি এখন কমে ৯৬ থেকে ৯৮ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। নগদ ডলার ব্যাংকগুলোতে এখনো ৯৩ থেকে ৯৭ টাকা করে বেচাকেনা হচ্ছে।

(আহৃত)

 


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT