1. admin@banglarakash.com : admin :
August 24, 2025, 3:51 am

রেস্টুরেন্ট-জুয়েলারিতে কমছে, বাড়বে ফ্রিজ উৎপাদনে

বাংলার আকাশ ডট কম email:banglar.akash.sif@gmail.com
  • Update Time : Thursday, May 26, 2022,
  • 95 Time View
Spread the love

প্রতিবারের ন্যায় আগামী অর্থবছরেও ভ্যাটই (মূল্য সংযোজন কর বা মূসক) থাকছে রাজস্ব আদায়ের প্রধান খাত। তবে কয়েকটি খাতে ভ্যাট হার কমানো হচ্ছে, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে জীবনযাত্রাকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে। অন্যদিকে ফ্রিজ উৎপাদন ও মোবাইল ফোনের ব্যবসা পর্যায়ে ভ্যাট হার বাড়ানো হচ্ছে। এতে বাজারে পণ্য দুটির দাম বাড়তে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

সূত্রগুলো বলছে, আগামী বাজেটে ভ্যাট আইনকে ব্যবসাবান্ধব করার নানামুখী প্রস্তাব থাকবে। পাশাপাশি কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে রাজস্ব লক্ষ্য আদায়ের কৌশল রাখা হচ্ছে। যেমন ২০১০ সাল থেকে স্থানীয় পর্যায়ে রেফ্রিজারেট বা ফ্রিজ উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এটি বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে বাজারে ফ্রিজের দাম বাড়তে পারে। পাশাপাশি মোবাইল সেট বিক্রয় পর্যায়ে ভ্যাট নেই। ব্যবসা পর্যায়ে মোবাইল সেটের ওপর বাড়িয়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট বসানো হচ্ছে। এতে মোবাইলের দাম বাড়তে পারে।

অবশ্য বাজেটে জনগণের স্বস্তির কথা চিন্তা করে কয়েকটি খাতে ভ্যাট হার কমানোর ঘোষণা দেবেন অর্থমন্ত্রী। অবসরে যারা পরিবার-পরিজন নিয়ে বাইরে হোটেল-রেস্টুরেন্টে খেতে পছন্দ তাদের জন্য সুখবর নিয়ে আসছে বাজেট। এখন এসি রেস্টুরেন্টে খেতে ১০ শতাংশ এবং নন-এসি রেস্টুরেন্টে খেতে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। আগামী বাজেটে উভয় ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। অর্থাৎ আগে এসি রেস্টুরেন্টে ১০০ টাকা খেলে ১০ টাকা ভ্যাট দিতে হতো, বাজেট পাশ হলে ১ জুলাই থেকে সেখানে ৫ টাকা ভ্যাট দিতে হবে। অবশ্য ৫ তারকা হোটেলে খেলে ১৫ শতাংশ হারেই ভ্যাট দিতে হবে। শুধু তাই নয়, বাজেটে নারীদের মন জয় করারও কৌশল রাখা হচ্ছে। জুয়েলারি শিল্পের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জুয়েলারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, জুয়েলারি মূল্যবানসামগ্রী হওয়ায় মানুষ ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে চায় না। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে জুয়েলারি শিল্পে ৩ শতাংশ ভ্যাট আদায় করা হয়। অনেক উচ্চবিত্ত শুধু কম ভ্যাট দিতে সেখান থেকে জুয়েলারি কিনে থাকেন। এতে বৈদেশিক মুদ্রা দেশ থেকে চলে যাচ্ছে। আগামী বাজেটে জুয়েলারি শিল্পের ভ্যাট ৩ শতাংশ করা হলে তা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে। এ সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ধন্যবাদ জানাই।

আর রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় রেস্তোরাঁর খাবার ব্যয় বেড়েছে। তাই অনেক ক্রেতা ভ্যাট দিতে চায় না। এ নিয়ে অনেক সময় কর্মচারীদের সঙ্গে বচসাও হয়। তাছাড়া নন-এসি রেস্তোরাঁর সংখ্যাও অনেক কমে গেছে। এনবিআর যদি রেস্টুরেন্ট খাতের ভ্যাট কমিয়ে ৫ শতাংশ করে তাহলে রাজস্ব আদায় আরও বাড়বে বলে মনে করি।

অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থতার জরিমানা কমানো হচ্ছে। বর্তমানে রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থতায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হয়। এটি কমিয়ে ৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। মূলত করোনাকালে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকে নিয়মমাফিক রিটার্ন জমা দিতে না পারায় মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়েছে। তাই বাজেটে জরিমানা যৌক্তিক করা হচ্ছে। এছাড়া ভ্যাট ফাঁকি, ব্যর্থতা ও অনিয়মের ক্ষেত্রে জড়িত রাজস্বের সমপরিমাণ জরিমানার বিধান আছে। এটি কমিয়ে অর্ধেক করা হচ্ছে। চলতি বাজেটে অনিয়মের জরিমানা দ্বিগুণ থেকে সমপরিমাণ করা হয়।

তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে আয়কর খাতে ১ লাখ ২২ হাজার ১০০ কোটি, ভ্যাট খাতে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯০০ কোটি এবং শুল্ক খাতে ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। অর্থাৎ ভ্যাটই থাকছে রাজস্ব আয়ের প্রধান খাত। ভ্যাট দেশের ধনী-গরিব সব শ্রেণির নাগরিককে সমান হারে দিতে হয়। রাজস্ব আদায়ের সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ হাতিয়ার হিসাবে ভ্যাটকে সব সময় বেছে নেয়া হয়েছে। নব্বই-পরবর্তী সব সরকারের আমলেই এটি হয়ে আসছে।

রাজস্ব আয়ের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে প্রথম বাজেট দেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। ওই অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে আমদানি শুল্কের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, আবগারি শুল্কে ৫৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং আয়করের ১০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ সেই সময় আমদানি শুল্ক রাজস্ব আদায়ের প্রধান খাত ছিল।

এরপরের অবস্থানে ছিল যথাক্রমে আবগারি শুল্ক ও আয়কর। এরপর ১৯৯১ সালে ভ্যাট ব্যবস্থার প্রবর্তনের পর থেকে ভ্যাট ছিল রাজস্ব আদায়ের প্রধান খাত। ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে ভ্যাট আদায় করা হয় ১ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা। আর আয়কর আদায় করা হয়েছিল ১ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা। এরপর থেকে রাজস্ব আদায়ের সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ ‘হাতিয়ার’ হিসাবে ভ্যাটকে বেছে নেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের এ ধারাবাহিকতা ভেঙে সব অর্থমন্ত্রী প্রত্যক্ষ কর বা আয়করকে রাজস্ব আয়ের প্রধান খাত হিসাবে পরিণত করার ইচ্ছা পোষণ করলেও ভ্যাটের বৃত্ত থেকে বের হতে পারেননি।

 

(আহৃত)


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT