ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লিবিয়া হয়ে ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নির্যাতনের ঘটনায় মানবপাচার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার এক ছাত্রলীগ নেতা। গ্রেপ্তার হওয়া মো. শাকিল হোসাইন সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামের বাসিন্দা। মানবপাচার দলের প্রধান অভিযুক্ত মুকুল ঠাকুরের মেয়ে-জামাই তিনি। তিনি সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। গতকাল শুক্রবার বিকেলে সালথা থানার মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মানব পাচার মামলায় উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ ফায়েজুর রহমান বলেন,মুক্তিপণের দাবিতে লিবিয়ায় শাকিল মিয়াকে আটকিয়ে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। ঘটনাটি গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়ায় সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় শাকিল মিয়ার বাবা টিটুল মিয়া বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মানবপাচার দমন আইনে সাত জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন । ওসি বলেন, মামলার পর শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে অভিযান চালিয়ে আসামী শাকিল হোসাইনকে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের নকুলহাটি বাজার এলাকা হতে গ্রেপ্তার করে। ওসি মোহাম্মাদ ফায়েজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শাকিল হোসাইন এই মামলার প্রধান আসামি মুকুল ঠাকুরের মেয়ে-জামাই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল হোসাইন অনেক তথ্য দিয়েছে। সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান বলেন,মো. শাকিল হোসাইন সালথা উপজেরা ছাত্রলীগের আট নম্বর সহসভাপতি। এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ যে সিদ্ধান্ত দেবে তা আমরা মেনে নেব। ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ এ ব্যাপারে বলেন, ঘটনাটি অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক , আমরা বিষয়টি তদন্ত করব। ছাত্রলীগের নামে কোন নেতাকর্মীর অপরাধের দায় সংগঠন নিবেনা। সত্যতা পেলেই তাকে বহিষ্কার করা হবে। ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা) মো. আছাদুজ্জামান বলেন, লিবিয়ায় শাকিল মিয়ার উপর নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা অভিযোগের পরেই প্রধান আসামী মুকুলের মেয়ে-জামাতা শাকিল হোসাইনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদালতের কাছে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন জানানো হবে। প্রসঙ্গত গত চার মাস আগে অভাবের সংসারে পরিবারের মুখে একটু হাঁসি ফোটাতে পড়াশোনা বাদ দিয়ে প্রতিবেশী মুকুল ঠাকুর নামে এক দালালের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতালির উদ্দেশ্য রওয়ানা হন সালথা উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের দিনমুজুর মো. টিটুল মিয়ার একমাত্র ছেলে শাকিল মিয়া। তিনি ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বাবা টিটুল মিয়া ও মা রাবেয়া বেগমের সন্তান। দুই ভাই বোনের মধ্যে শাকিল বড়।শাকিলকে লিবিয়ায় নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে তাকে আটকে রেখে দালালরা আরও ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছেন।