1. admin@banglarakash.com : admin :
August 24, 2025, 3:55 am

সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে বৈশ্বিক সংকট

বাংলার আকাশ ডট কম email:banglar.akash.sif@gmail.com
  • Update Time : Sunday, May 22, 2022,
  • 95 Time View
Spread the love

করোনাভাইরাস ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকট এক ধরনের ঝাঁকুনি দিচ্ছে দেশের অর্থনীতিকে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে দেশের আগামী এক বছরের আয় ও ব্যয় নিরূপণের (বাজেট প্রণয়ন) কাজ। এরসঙ্গে সার্বক্ষণিক যুক্ত আছেন অর্থমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন স্তরের নীতিনির্ধারকসহ সংশ্লিষ্টরা। সেখানে বড় দুটি বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলার কৌশলই গুরুত্ব পাচ্ছে। যার প্রতিফলন থাকছে আসন্ন বাজেটে। বিশেষ করে বিভিন্ন খাতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে থাকবে কৃচ্ছ সাধনের ঘোষণাও। পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ রাখা হবে খাদ্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে। আর গরিব মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার মতো কর্মসূচির ব্যাপ্তি বাড়ানোর উদ্যোগ। যে কোনো ঘটনা মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসাবে বাড়ানো হচ্ছে অপ্রত্যাশিত খাতে বরাদ্দও। থাকছে করপোরেট ছাড়ের ঘোষণা।

তবে সংকট, শঙ্কা ও টানপোড়েনের মধ্যেও আগামী বছরে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ অর্জনের প্রত্যাশা করছেন অর্থমন্ত্রী। এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের ব্যাপারে প্রত্যাশা দেখিয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদকদের সঙ্গে সম্প্রতি প্রাক-বাজেট বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘সংকট যখন জানালা দিয়ে আসে তখন একটি সম্ভাবনার দরজা খুলে যায়।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে। এতে মূল্যস্ফীতির হার লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে জ্বালানি তেল ও কৃষকের সারের ভর্তুকিতে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের ওপর ‘কালো মেঘের ছায়া’ পুরোপুরি কাটেনি। এতে হতদরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষ, শিক্ষিত বেকার ও সব শ্রেণির ভোক্তাসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা সংকট থেকে বের হতে পারছেন না। এসব বিষয়কে সামনে রেখে মোটা দাগে আগামী বাজেটে সংকট মোকাবিলা ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয়কে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সূত্রমতে অগ্রাধিকার খাতগুলো হচ্ছে-মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় কৌশল নির্ধারণ, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও অধিক খাদ্য উৎপাদন এবং সারের ভর্তুকি অব্যাহত রাখা। এছাড়া ব্যাপক কর্মসংস্থান-পল্লী উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বৃদ্ধি, নিম্ন আয়ের মানুষের বিনা বা স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি বাড়ানো। আর কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলো বাস্তবায়ন আরও সম্প্রসারণ করাও অগ্রাধিকারে থাকছে।

এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ চাপ মুক্ত রাখতে রেমিট্যান্স বাড়ানোর উদ্যোগ থাকছে। বিশেষ করে রেমিট্যান্স খাতে প্রণোদনার হার আরও বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে অর্থ বিভাগ। অপরদিকে বেসরকারি পর্যায়ে বিদেশ ভ্রমণ, বিদেশে চিকিৎসাসহ নানা কর্মকাণ্ডে যাতায়াতে যে ডলার নেওয়ার সিলিং সেটিও কমানোর উদ্যোগ থাকছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ভর্তুকি মোকাবিলা হচ্ছে আগামী বাজটের প্রধান চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ নিয়েই নতুন বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের কারণে খাদ্যপণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটছে। এই সরবরাহ চ্যানেল স্বাভাবিক রাখার সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এদিকে আগামী বাজেটে প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করাই মূল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সাবেক সিনিয়র অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ। তিনি বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পেছনে কম ছুটে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে রাখার দিকে যেতে হবে। কারণ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেখে জনজীবনে স্বস্তি আনা জরুরি। তিনি বলেন, কৃষি ও জ্বালানি খাতে এই সময়ে ভর্তুকি কমানো যাবে না। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্ভাব্য ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকার ব্যয় ধরে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের কাজ শুরু হয়েছে। এটি জিডিপির ১৫.৪ শতাংশ। প্রাপ্তির অঙ্কে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। আয় ও ব্যয়ের ব্যবধানে মোট ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৫.৫ শতাংশের মধ্যে রাখা হয়েছে।

সব ধরনের উদ্যোগ নিয়ে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির সম্ভাব্য হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ বিভাগ। অবশ্য চলতি অর্থবছরে সংশোধিত মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য মার্চের মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। অর্থাৎ এটি লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। বৈশ্বিক পণ্য সরবারহ সংকটের কারণে ভোজ্যতেল, গম, চিনিসহ সব ধরনের পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। সর্বশেষ প্রতি লিটার ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ভোজ্যতেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ২শ টাকায়। এতে মূল্যস্ফীতির হার আগামীতে আরও বৃদ্ধির শঙ্কা আছে। ফলে নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এ খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর অভ্যন্তরীণ খাতে বিনিয়োগ কমেছে। সে ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন বাজেটে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, করোনায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়নি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমেছে। অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাতের গবেষণায় উঠে এসেছে করোনাকালীন ৩ কোটি ৫৯ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়েছেন। যাদের মধ্যে দেড় কোটি মানুষ অর্থাৎ ৪০ শতাংশ আগের পেশায় ফিরতে পারেননি। তবে নতুন করে বিনিয়োগ বাড়াতে পারলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

সূত্র আরও জানায়, সম্প্রতি দেশের অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে আগামী বাজেট নিয়ে বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী। সেখানে অর্থনীতিবিদরা বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণ করে তা প্রকাশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। পাশাপাশি রেমিট্যান্স বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কৃষি খাতে উন্নয়নের কথা তুলে ধরেছেন সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য এসব প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে অর্থ বিভাগ।

(আহৃত)


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT