1. admin@banglarakash.com : admin :
November 12, 2025, 6:05 am
শিরোনাম :
রাজবাড়ীতে পাটকলের দুই গুদামে আগুন, ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা ফরিদপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত ফরিদপুরে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সেনাবাহিনীতে ১৯৮০ সালের হেলিকপ্টার কেনার আয়োজন ১৩ তারিখ ঢাকা যাওয়ার বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আটক ফরিদপুরে আইএমও ‌ এর উদ্যোগে ‌ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত আমানত প্রবৃদ্ধিতে শীর্ষ পাঁচে সিটি, ব্র্যাক, ইউসিবি, যমুনা ও পূবালী ব্যাংক আজ বিশ্ব বিজ্ঞান দিবস প্রাথমিক শিক্ষকদের তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু, ৬৫ হাজার স্কুলে ক্লাস বন্ধ

বহু অপরাধের হোতা পুলিশ পরিদর্শক মানিকুল যৌতুক মামলায় জেলে

বাংলার আকাশ নিউজ ২৪ ডট কম Email:banglarakashnews24@gmail.com
  • Update Time : Tuesday, August 29, 2023,
  • 53 Time View
Spread the love

অবশেষে নারী চিকিৎসক স্ত্রীর যৌতুকের মামলায় জেলে গেলেন নানা অপরাধের হোতা পুলিশের বরখাস্তকৃত পরিদর্শক মানিকুল ইসলাম। সিলেটের এক নারী চিকিৎসকের ৫০ লাখ টাকার যৌতুকের মামলায় আদালতে হাজির হলে সোমবার সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

এর আগে ভিকটিমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে পুলিশ সদর দপ্তর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করে। নানা অপরাধ করে খুঁটির জোরে বেঁচে যান মানিকুল।

১৭ বছরের কর্মজীবনে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছেন অসংখ্যবার। যার বেশির ভাগ গুরুতর অপরাধ। অথচ অজ্ঞাত জাদুর কাঠির বলে প্রতিবারই গুরুদণ্ড তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় মানিকুলের ধর্ষণ, নারীর শ্লীলতাহানিসহ নানা অপকর্ম নিয়ে একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়।

জানা যায়, সিলেটের ওসমানীনগর থানায় উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় পূর্বের বিয়ের তথ্য গোপন করে প্রবাসী এক নারী চিকিৎসকে বিয়ে করেন মানিকুল। এর কিছুদিন পরই যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন শুরু করেন মানিকুল। একপর্যায়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হননি তিনি। ইতিমধ্যেই তার পূর্বের স্ত্রী সন্তানের খবর জেনে যায় ভুক্তভোগীর পরিবার। এ নিয়ে কথা বললেই শুরু হয় নির্যাতন।

২০১৭ সালে প্রবাস থেকে দেশে ফিরেন সেই নারী চিকিৎসক। সেদিনই তাকে বিমানবন্দর থেকে তুলে নিয়ে ৫০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য নির্যাতন করেন মানিকুল। সেই সময় গাড়িতে চিৎকার শুনে ঢাকা সিলেট হাইওয়ের নবীগঞ্জে স্থানীয়রা আটক করে মানিকুলকে। পরে সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে যায়। সে সময় হবিগঞ্জে কর্মরত থাকায় ভিকটিম পুলিশ সুপারের কাছে বিচারপ্রার্থী হলে পারিবারিকভাবে অঙ্গীকার করে মীমাংসা করেন।

এর কিছুদিন পর ভুক্তভোগী আবারো দেশে ফিরলে আবারো নির্যাতন শুরু করেন মানিকুল। অবশেষে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সিলেট রেঞ্জের ডিআিইজ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন সেই নারী। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে হবিগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জে বদলি করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ করলে তদন্ত শেষে বিভাগীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি, নৈতিকস্খলন, অসততা, অদক্ষতা ও অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সাময়িক বরখাস্ত করে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে ন্যস্ত করা হয়। এরপর আরও ক্ষিপ্ত হন মানিকুল।

২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মানিকুলের বিরুদ্ধে সিলেটে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে পাশবিক নির্যাতন ও ৫০ লাখ টাকা যৌতুক দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী। আদালত মামলা আমলে নিয়ে ৭ দিনের মধ্যে উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।

অনুসন্ধান শেষে ভিকটিমের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের পর মানিকুলের বিরুদ্ধে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। তারপর থেকে পুলিশের কাছে পলাতক ছিলেন মানিকুল। একপর্যায়ে উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নেন তিনি।

ভিকটিমের আইনজীবী রুহুল আনাম চৌধুরী মিন্টু  জানান, তাদের ধারণা সেই জামিন নেওয়ার সময়ও এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি উচ্চ আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি।

তিনি জানান, সেই জামিন শেষে আজ আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

মানিকুলের অপরাধের শেষ নেই

জানা যায়, মানিকুল ইসলামের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আবুল কাশেম। ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর এসআই (নিরস্ত্র) পদে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন মানিকুল ইসলাম। বিএনপির তৎকালীন মন্ত্রী রাজশাহীর আমিনুল ইসলামের তদবিরে তার চাকরি হয়। এই পদে তার প্রথম পোস্টিং রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায়।

এরপর ২০০৭ সালের ১৪ আগস্ট সিলেট রেঞ্জে বদলি হয়ে আসেন। এর দুইদিন পরই হবিগঞ্জের মাধবপুর থানায় এসআই হিসাবে যোগদানও করেন। ২০০৯ সালের ১৭ এপ্রিল তাকে বদলি করা হয় সিলেট জেলা ডিএসবিতে। এরপর হবিগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, আবারো সিলেট ডিএসবি, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ, ডিবি, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনস, রাজশাহী রেঞ্জ অফিস, সিরাজগঞ্জ ডিবি ও রংপুর রেঞ্জ অফিসে কর্মরত ছিলেন।

১৭ বছরের চাকরিজীবনে মানিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুতর ১৩টি অভিযোগ প্রমাণ পেয়েছেন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা, যা আইন প্রয়োগকারী একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কিন্তু বারবার তাকে সর্বনিম্ন সাজা ‘তিরস্কার’ করে অভিযোগের সব ফাইল ধামাচাপা দেওয়া হয়। অথচ যেসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তা আমলে নেওয়া হলে তার চাকরিই থাকার নয়।

এসব অভিযোগের মধ্যে ছিল- হত্যা মামলার আসামিদের চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া, নারীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, পুলিশ সুপারের নির্দেশ অম্যন্যসহ নানা গুরুতর অপরাধ।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের একজন ব্যবসায়ী নিজের স্ত্রীর সঙ্গেও অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগে মনিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে তৎকালীন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এ অভিযোগেও তার কোনো শাস্তি হয়নি। সিরাজগঞ্জে থাকা অবস্থায় একজন পৌর কাউন্সিলরের স্ত্রীকেও ভাগিয়ে নিয়ে চলে আসেন মানিক। ওই বিষয়টিও আপোষ-মীমাংসা করা হয়।

সিলেটের একজন ফিজিও থেরাপিস্টকে ধর্ষণের চেষ্টাও করেছেন। ওই ঘটনার পর ভিকটিমের সংসারও ভেঙে গেছে। ওই ফিজিও থেরাপিস্ট এ বিষয়ে সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাও করেছেন।

হবিগঞ্জের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের একজন নার্সের সম্ভ্রমহানিও করেছেন। লোকলজ্জার ভয়ে তিনি কোনো অভিযোগই করেননি। এই শেষ নয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ জালিয়াতিতেও ধরা পড়ে তার কিছু হয়নি।

এসব অভিযোগ নিয়ে গত বছরের ২৮ মে ‘গুরুতর অপরাধের সাজা তিরস্কার” শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপা হয়।


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT