1. admin@banglarakash.com : admin :
August 24, 2025, 3:54 am

আ.লীগের সামনে যে বড় বাধা

বাংলার আকাশ নিউজ ২৪ ডট কম Email:banglarakashnews24@gmail.com
  • Update Time : Tuesday, July 4, 2023,
  • 18 Time View
Spread the love

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশের ভেতরে ও বাইরে বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ। বিষয়টি দলের নীতিনির্ধারক মহল প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও পর্দার আড়ালে চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে তা মোকাবিলার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।

 

ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্যায় মনে করে, ১৫ বছরের টানা শাসনে তারা অভূতপূর্ব উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ভুলত্রুটি থাকলেও পরবর্তী মেয়াদে ক্ষমতায় এসে তারা জন-অসন্তোষের সবকিছু সফলভাবে উতরাতে চায়।

 

তবে টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসার জন্য সরকার বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনকে পাত্তা দিতে নারাজ। তাদের বিশ্বাস, রাজপথের আন্দোলনে কেউ আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করতে পারবে না। তবে তাদের মাথাব্যথার একটিই কারণ; সেটি হলো-বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্ররা যদি ভূরাজনৈতিক স্বার্থ আদায়ের জন্য আরও চাপ বৃদ্ধি করে, একই সঙ্গে রাজপথের বিরোধী দলগুলোকে ব্যবহার করার পন্থা বেছে নেয়। পাশাপাশি আরও স্যাংশন দিতে চায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতা সরকারি দলের চ্যালেঞ্জের বিষয়গুলো যুগান্তরের কাছে এভাবে ব্যাখ্যা করেন।

 

আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ যুগান্তরকে বলেন, বিদেশি শক্তি বা ষড়যন্ত্রের মদদে এবং সেটিকে মোকাবিলা করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটা অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু করা আওয়ামী লীগের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, নির্বাচন বন্ধ করার জন্য একটা চক্রান্ত হচ্ছে। এজন্য তিনি বিরোধী দল বিএনপিকে দায়ী করেন।

 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করব দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে। বিএনপি একদফার আন্দোলন বা আন্দোলনের নামে যদি পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, সেটা মানা হবে না। তখন রাজনৈতিকভাবেই তাদের মোকাবিলা করা হবে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা যুগান্তরকে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তাদের (আওয়ামী লীগের) সামনে বড় চ্যালেঞ্জ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ। ইতোমধ্যে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ইস্যুতে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল এ মাসে ঢাকা সফর করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরাও এ মাসে ঢাকা আসবেন। যুক্তরাষ্ট্রের টিম গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রশ্নে কোনো ছাড় দিতে নারাজ। নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি না হলে পরবর্তী সময়ে তারা কী পদক্ষেপ নিতে পারে, তাও অনেকটা স্পষ্ট করেছে। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য মার্কিন কংগ্রেসম্যানরা চিঠি দিয়ে তাদের প্রেসিডেন্টকে চাপ প্রয়োগ করেছেন। এদিকে র‌্যাবের পর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে আরও কিছু সেক্টরে। বিশেষ করে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশকে বাইরে রাখার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

 

এর বাইরে বিএনপির একদফার আন্দোলন শুরু হলে দেশকে স্থিতিশীল রাখাও সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অতীতের মতো জ্বালাও-পোড়াও বা সহিংস পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সে বিষয়টি নিয়ে বেশ সতর্ক আওয়ামী লীগের নেতারা।

 

এ সময় তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ মেটানো আরেকটি চ্যালেঞ্জ। কারণ, টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে একদিকে যেমন কিছু নেতাকর্মী ফুলেফেঁপে উঠেছেন, তেমনই দলের অসংখ্য নেতাকর্মী হয়েছেন উপেক্ষিত। তৈরি হয়েছে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা উপদল। এ নিয়ে একরকম খুনোখুনি লেগেই আছে। নেতাকর্মীদের এক কাতারে আনতে না পারলে বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে। এই অভ্যন্তরীণ বিরোধ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে নেতারা আশঙ্কা করছেন।

 

নির্বাচনি বছরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। দেশের মানুষ সংসার চালাতে গিয়ে কঠিন সংকটের মধ্যে রয়েছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং। শহরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সহনীয় হলেও গ্রামের চিত্র ভিন্ন। কখন বিদ্যুৎ আসে, কখন যায় আর কতক্ষণ থাকে, এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা তাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে মানুষের ক্ষোভ আরও বাড়বে। সরকারবিরোধী কাতারে জনগণের যুক্ত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

 

আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী মনে করেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানতে না পারলে এর জন্য ক্ষমতাসীন দল হিসাবে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক মূল্য দেওয়া লাগতে পারে। তবে বিষয়টি তারা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করতে চান না। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এই পরিস্থিতির জন্য করোনা মহামারি এবং চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করে আসছেন। কিন্তু দেশের মানুষ এই যুক্তি পুরোপুরি মানতে রাজি নন। তারা এজন্য সরকারের সদিচ্ছাকেও দায়ী করতে চান।

 

ভোটের আগে ১৪ দলের শরিক ও অন্য মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখা আওয়ামী লীগের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ অনেকটা ক্ষোভ থেকে মহাজোট থেকে একপ্রকার বের হয়ে সরকারবিরোধী অবস্থান নিয়েছে জাতীয় পার্টি। মূলধারার নেতারা সরকারের সমালোচনায় মুখর। বাংলাদেশ জাসদ ১৪ দল ছেড়েছে। বিরোধ প্রকাশ্যে না এলেও ১৪ দলের কয়েকটি শরিক রাজনৈতিক দলের নেতা সরকারের সমালোচনা করে যাচ্ছেন। তাদের অবস্থান শেষ মুহূর্তে কী হয়, তা নিয়ে চিন্তিত খোদ আওয়ামী লীগ নেতারাই। আসন ভাগাভাগিসহ কয়েকটি ইস্যুতে শরিকদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার ওপর জোর দিচ্ছেন তারা।

 

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এবার যোগ্য প্রার্থী বাছাই এবং দলের ইশতেহার তৈরি করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হতে পারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে। কারণ, মাঠের ত্যাগী নেতাকর্মীদের পাশাপাশি অগণিত কালোটাকার মালিক এই নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চাইবেন। যারা টাকার জোরে মনোনয়ন বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। অতীতের মতো নির্বাচন হলে সহজেই এমপি হওয়া যাবে-এ ধারণা থেকে এবার কালোটাকার মালিক বা নব্য বিত্তশালী হয়ে ওঠা ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন। তাদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থী খুঁজে বের করার কাজটি হবে খুবই কঠিন।

(আহৃত)


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT