বাংলার আকাশ ডেস্ক
ফরিদপুর: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (এলজিআরডি) সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসেনের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) এএইচ এম ফুয়াদের ৫ কোটি ৪৪ লাখ ৯৫ হাজার ৫৮৬ টাকা মূল্যের সম্পত্তি ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ফরিদপুরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত সোমবার (২৪ নভেম্বর) এই সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেন।
ক্রোক করা সম্পত্তির মধ্যে একটি ফ্ল্যাটসহ মোট ৩৮.৯৩৩ শতাংশ জমি রয়েছে বলে তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান।
সিআইডি কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন খান জানান, মানিলন্ডারিং তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে ফুয়াদ সাবেক মন্ত্রীর মন্ত্রণালয়কালীন সময়ে এপিএস হিসেবে কাজ করতেন। এসময় তিনি ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বরকত এবং তার ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে ‘হেলমেট বাহিনী’ নামে একটি অপরাধী চক্র গঠন করেন।
এই বাহিনী ব্যবহার করে তিনি এলজিইডি, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, শিক্ষা অধিদপ্তর, গণপূর্ত, বিএডিসি, পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ, রোডস অ্যান্ড হাইওয়েসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন। এসব টেন্ডার থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন নিয়ে ফুয়াদ বিপুল সম্পদ গড়ে তোলেন।
তদন্তে আরও জানা যায়, ফুয়াদ বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করতেন। তার প্রথম স্ত্রী ফারজানা ফোয়াদ, দ্বিতীয় স্ত্রী তাছলিমা আক্তার বাবলী, এবং দ্বিতীয় পক্ষের শাশুড়ি নাদিরা বেগম-সহ অন্যান্য আত্মীয়দের নামেও বেনামে বহু জমি কেনার তথ্য সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে। বর্তমানে ক্রোক হওয়া এসব সম্পত্তি তার ভাই ও ভাগিনার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া, বেনামে বিলাসবহুল বাস কিনে পরিবহন খাতেও তিনি বিনিয়োগ করেছেন।
অনুসন্ধান শেষে, সিআইডি বাদী হয়ে গত আগস্ট মাসে ফুয়াদের বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করে। মামলাটির তদন্ত বর্তমানে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট পরিচালনা করছে।
সিআইডি জানিয়েছে, এই অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত এবং তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।