1. admin@banglarakash.com : admin :
October 16, 2025, 7:06 am

নদীভাঙনে আর কত দিন পাঠদান বন্ধ থাকবে

BanglarAkash desk
  • Update Time : Thursday, October 16, 2025,
  • 17 Time View
Spread the love

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গত ১৪ সেপ্টেম্বর পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্কুলটিতে পড়ত চরাঞ্চলের ৪০০ পরিবারের সন্তান। এক মাস পার হয়ে গেলেও স্কুলটি নতুন করে কোথাও চালু হলো না।

শিক্ষার্থীরাও আর স্কুল যায় না। অনেকের ঝরে পড়ার আশঙ্কা। চরাঞ্চলে শিক্ষার আলো জ্বালানোই যেখানে বড় চ্যালেঞ্জ, সেখানে একটি স্কুলের কার্যক্রম স্থবির হয়ে থাকবে, তা কোনোভাবে মানা যায় না।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নাম উত্তর মাথাভাঙা মান্নান সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নে ২০১৭ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পাকা ভবনও করে দেয় সরকার। কিন্তু আট বছরের মাথায় ভবনটি নদীগর্ভে চলে গেল। এর পর থেকে স্কুলের কার্যক্রম বন্ধই আছে। অনেক অভিভাবক দিশাহারা হয়ে সন্তানদের মুন্সিগঞ্জ বা চাঁদপুরের স্কুল-মাদ্রাসায় ভর্তি করছেন। অনেকে আবার নদীভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে এলাকা ছাড়ছেন, সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের সন্তানদের শিক্ষার স্বপ্নও। এই ঘটনা আমাদের সামনে এমন বাস্তবতা হাজির করে—চরাঞ্চলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যতটা কঠিন, তার চেয়েও কঠিন সেগুলোকে টেকসই ও নিরাপদ রাখা।

বিদ্যালয় বিলীন হওয়ার পর স্থানীয় শিক্ষা কার্যালয় দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। প্রধান শিক্ষক যদিও বলছেন, জমিদাতারা দূরে জমি দিতে রাজি হয়েছেন, কিন্তু পাঁচ-ছয় কিলোমিটার দূরত্ব, তার ওপর নদী পার হওয়ার ঝক্কি—এসব বিষয় শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার জন্য চরম বাধা। প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শিশুদের জন্য যাতায়াত সহজ হবে, এমন বিকল্প স্থানের খোঁজে আছেন। কিন্তু তত দিনে দরিদ্র পরিবারের শিশুদের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে ধরে রাখা যাবে?

উত্তর মাথাভাঙা গ্রামটি পদ্মার চরে অবস্থিত। এখানকার মানুষ মূলত মৎস্য শিকার ও কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এমনিতেই তাদের মধ্যে পড়ালেখার আগ্রহ কম, তার ওপর একটিমাত্র স্কুল বিলীন হয়ে গেলে সেই আগ্রহ ধরে রাখা কঠিন। শিক্ষা কার্যালয় তিনজন শিক্ষককে পাশের স্কুলে সংযুক্ত করেছে, কিন্তু যেখানে শিক্ষার্থীরাই নেই, সেখানে শিক্ষকদের সংযুক্ত করে কী লাভ?

দ্রুত সময়ের মধ্যে সহজ যাতায়াত সম্ভব, এমন স্থানে একটি অস্থায়ী পাঠদান কেন্দ্র স্থাপন করে স্কুলটির কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা হোক। যারা এলাকা ছেড়ে চলে গেছে, তাদের ঠিকানা ও ভর্তির তথ্য সংগ্রহ করে শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান থাকবে নদীভাঙনের শিকার পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের মনোযোগ দিতে এবং সেখানে ভুক্তভোগী পরিবারের শিশুদের শিক্ষার বিষয়টি যেন অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।


Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LatestNews
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT